বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা তাদের হল না ছাড়ারও ঘোষণা দিয়েছেন।
‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আয়োজিত ‘সংহতি সমাবেশে’ শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তার পদত্যাগ দাবিতে শ্লোগান চলছে।
অন্যদিকে বাসভবন ও তার আশপাশে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রেখেছে প্রশাসন।
ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, যেকোনো ধরনের অপ্রিতিকর পরিস্থিতি এড়াতেই পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। পুলিশি হামলা বা গ্রেপ্তারের বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। বলেন, ‘পরিস্থিতির ওপর সব নির্ভর করবে।’
এদিকে বিকাল সাড়ে ৩টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দিলে আতঙ্ক দেখা দেয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে। ওই সময়ের মধ্যে হল না ছাড়লে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ার দেয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। ফলে অনেক শিক্ষার্থীকে হল ছেড়ে যেতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে প্রশাসনের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে এখনো হলে ছাড়েননি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীসহ কিছু সাধারণ শিক্ষার্থী। তারা হল বন্ধের প্রতিবাদ জানিয়ে আন্দোলন করছেন। ইতোমধ্যেই হলের গেটে তালা লাগিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইসাথে হল সংলগ্ন খাবার দোকানও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এর আগে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিলটি ছাত্রীদের হলের দিকে গেলে হল থেকে ছাত্রীরা বেরিয়ে এসে মিছিলে যোগ দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ছাত্রী হল ঘুরে পরিবহন চত্বর হয়ে পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে সমাবেশ শুরু হয়।
দুর্নীতির অভিযোগ এবং আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার পর ফারজানার ভিসি পদে থাকার নৈতিক অধিকার নেই বলে মনে করেন ‘সংহতি সমাবেশে’ উপস্থিত শিক্ষকরা। তারা উপাচার্যকে বরখাস্ত করার দাবি জানিয়েছেন।
বুধবার বেলা সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে ‘সংহতি সমাবেশে’ অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনও সম্পূর্ণ সরকারের নিয়ন্ত্রণে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, ছাত্রলীগ, সরকারি দলের রিপোর্টের ভিত্তিতে উপাচার্য নিয়োগ হয়ে থাকে। আমরা দেখতে পাচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ। হলে হলে যাদের নির্যাতন চলে তাদের পৃষ্ঠপোষোকতায় ভিসি টিকে আছে।’
‘বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার নিয়োগকৃত ভিসি এবং সরকারি ছাত্র সংগঠনের মাধ্যমে দুর্নীতি প্রকাশিত হয়েছে। এতদিন ধরে আন্দোলন চলে, অথচ সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, তদন্ত কমিটি গঠন করেনি।
আমাদের দাবি থাকবে আজকের মধ্যেই এ সমস্যা সমাধানে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে,’ যোগ করেন তিনি।
সংহতি সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর তপন কুমার সাহা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক তানজীম উদ্দিন খান, অধ্যাপক রায়হান রাইন, অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ ভুঁইয়া, অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, অধ্যাপক খবির উদ্দিন, অধ্যাপক কবিরুল বাশার, অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি উপস্থিত ছিলেন।