তিন বছর ধরে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে এসব আপিল ঝুলে রয়েছে। তদন্ত সংস্থা থেকে আপিল বিভাগের তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ গঠন করে ঝুলে থাকা এসব আপিল শুনানির উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন তদন্ত সংস্থার প্রধান সম্পাদক আব্দুল হান্নান খান।
তিনি বলেন, ‘গত তিন বছর ধরে আপিল শুনানির উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। আমরা খুবই হতাশ। ফলে কাঙ্ক্ষিত গতিতে মামলার বিচার কার্যক্রম চলছে না।’
সোমবার সকালে ধানমণ্ডির তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে গাইবান্দার গোবিন্দগঞ্জের ৯ রাজাকারের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।
হান্নান খান আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলা বিচারাধীন। আমরা মনে করি মানবতাবিরোধী অপরাধের আপিলের মামলাগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বিচারাধীন অন্যান্য মামলার পাশাপাশি এসব মামলার গুরুত্ব বিবেচনা করে চূড়ান্ত আপিল নিষ্পত্তির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে শুনানির উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে।
৯ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল: একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গাইবান্দার গোবিন্দগঞ্জের ৯ রাজাকারের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশন শাখায় দাখিল করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা থেকে সোমবার বিকালে সংস্থার প্রসিকিউশন শাখায় তিনটি ভলিয়মে ১৮১ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
তারা হলেন- গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শ্রীমুখের মোফাজ্জল হক প্রধান ওরফে মোফা (৮২), নাসিরাবাদ কলোনির আবদুল করিম (৬৩), পলাতক মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন ওরফে সরফ উদ্দিন খান ওরফে সাইফ উদ্দিন (৬৪), পলাতক সামছুল ইসলাম খান (৬৪), হামিদপুর চিত্তিপাড়ার সেকান্দার আলী (৬৬), মালেকাবাদ এলাকার ইসমাইল হোসেন (৭০), হরিপুরের আকরাম প্রধান (৬৮), পুনতাইড় আগপাড়ার হাফিজুর রহমান (৬৪) ও বামন হাজরার পলাতক আবদুল মান্নান (৬৪)।
একাত্তরের ১০ মে থেকে একই বছরের ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত আসামিরা কাটাবাড়ি ইউনিয়নের ১নং কাটাবাড়ি ও ৭নং কাটাবাড়ি গ্রাম এবং মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের শ্রীপতিপুর ও বালুয়া গ্রামে অপরাধ সংঘটিত করে। তাদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, আটক ও অপহরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আমিনুর রশীদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক মো. আবদুল হান্নান খান আরও উল্লেখ করেন, ‘রাজাকার কমান্ডার মোফা একাত্তর সালে জামায়াতের নেতা হিসেবে গোবিন্দগঞ্জ থানার রাজাকার কমান্ডার নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আবদুল করিম ১৯৭১ সালে জামায়াতের কর্মী হিসেবে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। তবে বর্তমানে জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আছেন। শরীফ উদ্দিন, সামছুল ইসলাম খান, সেকান্দার, ইসমাইল, আকরাম, হাফিজার রহমান, আবদুল মান্নান একাত্তর সালে জামায়াতের কর্মী হিসেবে রাজাকার বাহিনীতে ছিলেন। বর্তমানে তারা জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।’