সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ ভোট বিরতিহীনভাবে বেলা ২টা পর্যন্ত চলবে।
এদিকে ভোটের আগেই রাতে ব্যালট বাক্স ভরে রাখায় কুয়েত মৈত্রি হলের ভোট স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া রোকেয়া হলে প্রায় সোয়া ১ ঘণ্টা পর ভোট গ্রহণ শুরু হয়।
২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ঐতিহাসিক এ নির্বাচনে সারাদেশের মানুষের দৃষ্টি এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
এদিকে নিজের ভোট দিয়ে ছাত্রলীগ ভিপি প্রার্থী শোভন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে। জয়ের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া তথ্যানুসারে, ৪৩ হাজার ২৫৬ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৬ হাজার ২৯২ জন নারী এবং ২৬ হাজার ৯৬৪ জন পুরুষ ভোটার রয়েছে।
ডাকসুর ২৫টি পদে বিভিন্ন প্যানেল ও স্বতন্ত্রভাবে ২২৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তাদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পদে- ভিপি (ভাইস প্রেসিডেন্ট) পদে ২১ জন, জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে ১৪ জন, এজিএস (সহ সাধারণ সম্পাদক) পদে ১৩ জন প্রার্থী রয়েছেনন।
এছাড়াও হল সংসদ নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি আবাসিক হলের প্রতিটিতে ১৩টি করে পদে মোট ৫০৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনের সার্বিক বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রাব্বানী ইউএনবিকে বলেন, ‘২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক করা আমাদের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ ভালো রয়েছে। আশা করছি আমরা ভালোভাবেই শেষ করতে পারবো।’
নির্বাচনের দিন সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে জানিয়ে প্রক্টর বলেন, তবে অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা যাতে তাদের ভোট দিতে পারেন এ জন্য সকল রুটের বাস চলাচল অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিক থাকবে।
১৮ আবাসিক হলে ৫০৮টি ভোট কেন্দ্র : বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তথ্যনুসারে, ১৮টি আবাসিক হলে ৫০৮টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। তাদের মধ্যে জগন্নাথ হলে ২৫টি, ড. মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ হলে ২০টি, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে ৩০টি, শামসুন্নাহার হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ও ফজলুল হক হলে ৩৫টি করে, মাস্টারদা সূর্যসেন হলে ২১টি, জহুরুল হক হলে ২২টি, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ২০টি, রোকেয়া হলে ৫০টি, কবি জসিমউদ্দীন হল, অমর একুশে হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ২০টি করে, এএফ রহমান হলে ১৬টি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ২৪টি, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলে ১৯টি, কবি সুফিয়া কামাল হলে ৪৫টি এবং বিজয় একাত্তর হলে ৪০টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে।
ডাকসু নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক এসএম মাহফুজুর রহমান বলেন, কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হচ্ছে।
ডাকসুর কোন পদে কত প্রার্থী: প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত তালিকানুসারে, ডাকসু নির্বাচনের ২৫টি পদে মোট ২২৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে ভিপি পদে ২১ জন, জিএস পদে ১৪ জন এবং এজিএস পদে ১৩ জন রয়েছেন।
পাশাপাশি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক এবং কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক পদে ৯ জন করে, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে ১১ জন, সাহিত্য সম্পাদক পদে ৮ জন, সংস্কৃতি সম্পাদক পদে ১২ জন, ক্রিড়া সম্পাদক পদে ১১ জন, পরিবহন সম্পাদক পদে ১০ জন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১৪ জন এবং ৮৬ প্রার্থী সদস্য পদে লড়ছেন।
হল সংসদ নির্বাচন: হল সংসদ নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি আবাসিক হলের প্রতিটিতে ১৩টি করে পদে মোট ৫০৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
যাদের মধ্যে মূল প্রতিযোগিতার সম্ভাবনা: ডাকসুতে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্যানেল এবং কোটা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সৃষ্টি হওয়া বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্যানেলের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ছাত্রলীগের প্যানেলে ভিপি, জিএস ও এজিএস পদে যথাক্রমে রেজাওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, গোলাম রাব্বানী এবং সাদ্দাম হোসেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপরদিকে ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের হয়ে ভিপি, জিএস ও এজিএস পদে যথাক্রমে নূরুল হক নুরু, মোহাম্মাদ রাশেদ খান এবং ফারুক হোসেন লড়ছেন।
অপরদিকে ছাত্রদলের প্যানেলে ভিপি পদে মুস্তাফিজুর রহমান, জিএস পদে আনিসুর রহমান এবং এজিএস পদে খোরশেদ আলম সোহেল লড়বেন। তাছাড়াও বামজোট প্যানেল থেকে লিটন নন্দী, ফয়সাল মাহমুদ এবং সাদেকুল ইসলাম যথাক্রমে ভিপি, জিএস ও এজিএস পদে লড়ছেন।
স্বতন্ত্র জোট হিসেবে অওরুনি সেমন্তি খান, শফি আব্দুল্লাহ এবং অমিত প্রামানিক ডাকসুর মূল পদে লড়ছেন।
পাশাপাশি স্বাধিকার স্বাতন্ত্র জোটের হয়ে জিএস পদে লড়বেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি এআরএম আসিফুর রহমান এবং এজিএস পদে লড়ছেন আবু রায়হান খান।
অপরদিকে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির জিএস পদে লড়ছেন।