বুধবার সংসদে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বিলটি উত্থাপন করেন এবং এটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, বিলটিতে গণমাধ্যম ব্যক্তিদের উদ্বেগ প্রতিফলতি হয়নি এবং তাদের মতামতকে গ্রহণ করা হয়নি। যা তাদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে ঝুঁকির সৃষ্টি করবে।
অন্যদিকে, বিলটিতে ব্রিটিশ আমলের অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট অন্তর্ভুক্ত করা দুঃখজনক এবং হতাশাজনক, বলেন তিনি।
তিনি বলেন, এটা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা এবং গবেষণা সীমাবদ্ধ করবে। ‘যখন এই আইন প্রণয়ন হবে তখন এটি সংবিধানের প্রধান মর্ম বিশেষ করে বাক স্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা লঙ্ঘন করবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা দেশের নাগরিকদের অনিরাপত্তা সৃষ্টি করবে,’ বলেন ইমাম।
ইমামের সাথে কয়েকজন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান, শামীম হায়দার পাটওয়ারী, মোহাম্মাদ নোমান এবং সেলিম উদ্দীন বিলটির ক্ষেত্রে জনমত নেয়ার প্রস্তাব করেন, কিন্তু পরে এটি বাতিল করা হয়।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, মন্ত্রণালয় ২০১৫ সাল থেকে সংশ্লিষ্ট সবার কাছে বিলটি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। কেউ যদি সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রতিবেদনটি পড়েন তাহলে তিনি দেখবেন যে সাংবাদিকদের সাথে এবিষয়ে কত আলোচনা করা হয়েছে।
‘প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা সাংবাদিকদের মতামতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি, তাদের মতামতের ভিত্তিতে আমরা প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনেছি,’ যোগ করেন তিনি।
মন্ত্রী জানান, এই আইন চিন্তা ও বাক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার দ্বার খুলে দেবে।
বিলে অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে তিনি বলেন, এই আইনের অধীনে শাস্তি হওয়ার কোনো নজির নেই। ‘এই আইন সংবাদপত্রকে দমন বা সংবাদপত্র শিল্পকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নয়।’
তিনি সুনিশ্চিতভাবে বলেন যে এই আইন শুধুমাত্র ডিজিটাল অপরাধের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হবে।
ভবিষ্যতের যুদ্ধ ডিজিটাল যুদ্ধ হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ওই যুদ্ধে প্রজাতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। ‘আমরা যদি আমাদের দেশকে সুরক্ষিত না রাখি তাহলে আমাদের দায়ী হতে হবে।’
আইনটিকে দেশের জন্য ঐতিহাসিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেক উন্নত দেশ নিয়মিতভাবে আইনটির অগ্রগতি নিয়ে জিজ্ঞাসা করেছে। এই আইন বিশ্বের অনেক দেশ অনুসরণ করবে। কারণ ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য বর্তমানে কোনো আইন নেই।’
সিঙ্গাপুরের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সেটার সাথে তুলনা করলে যে কেউ দেখবেন যে আমরা আমাদের আইনটি বানিয়েছি স্বর্গ হিসেবে এবং ওই আইনটিকে (সিঙ্গাপুরের) মনে হবে কারাগার।’
তবে মন্ত্রী আইনটির ৪৩ ধারা সংশোধনে ফখরুল ইমাম একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেন।