তিনি বলেন, ‘দেশে যদি শান্তি ও শৃঙ্খলা থাকে তাহলে অগ্রগতি অবশ্যম্ভাবী। তাই সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে। দেশের মানুষের শান্তি ও নিরাপদে থাকা আমরা নিশ্চিত করতে চাই।’
সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০১৯ উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনায় উপস্থিত সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিদের উদ্দেশে দেয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এছাড়া, শেখ হাসিনা সশস্ত্র বাহিনীকে তাদের সর্বোচ্চ দায়িত্ববোধ ও শৃঙ্খলা বজায়ের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ধারা সমুন্নত রাখতে অবদান রাখার তাগিদ দেন।
‘আমি বিশ্বাস করি আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সর্ব অবস্থায় চেইন অব কমান্ড মেনে ও সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে দেশ গঠনে তাদের ভূমিকা অব্যাহত রাখবে,’ বলেন তিনি।
বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সশস্ত্র বাহিনীসহ সবাইকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে এক সাথে কাজ করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি ও দেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে। ‘উন্নয়নশীল দেশের এ স্বীকৃতি ধরে রেখে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’
তিনি জানান, বাংলাদেশ গত অর্থবছরে ৮.১৩ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং চলতি অর্থবছরের জন্য এ লক্ষ্যমাত্রা হলো ৮.২০ শতাংশ।
২০০৬ সালে থাকা দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে এখন ২১ শতাংশ হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দারিদ্র্যের হার আরও কমাতে চায়।
‘আমরা যদি দারিদ্র্যের হার ১৫-১৭ শতাংশে নামিয়ে আনতে পারি তাহলে অবশ্যই দারিদ্র্যমুক্ত দেশের স্বীকৃতি পাব,’ বলেন তিনি।
বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন যথেষ্ট শক্তিশালী জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। নিজেরা নিজেরা বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে চাই। আমি চাই আপনারা সবাই যার যার অবস্থান থেকে আন্তরিকতার সাথে কাজ করে আপনাদের নিজের দেশকে গড়ে তুলবেন।’
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সময় তার পাশে ছিলেন তার নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং তিন বাহিনীর প্রধানরা।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বিদেশি কূটনীতিক, বিভিন্ন পেশার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব, সম্পাদক, সিনিয়র সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তি ও তাদের জীবনসঙ্গীরা সংবর্ধনায় যোগ দেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী নতুন করে সম্প্রসারণ ও সংস্কার করা সেনাকুঞ্জের উদ্বোধন করেন।
আজকের এ দিনে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী নিয়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর আত্মপ্রকাশ হয় এবং তারা দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর সর্বাত্মক আক্রমণ চালায়। যার ফলে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় ত্বরান্বিত হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এ ঐতিহাসিক দিনটি সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে।