তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি প্রতিরোধে আমাদের সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। এজন্য সর্বক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। কারণ সবকিছু ডিজিটাল হলে দুর্নীতি এমনিতেই কমতে থাকবে। এজন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আরও শক্তিশালী ও কৌশলী হতে হবে।’
রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে 'দুর্নীতি বিরোধী অভিযান ও নেতৃত্বের সাফল্য' শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
‘বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন একটি চ্যালেঞ্জিং ইস্যু এবং একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই এটা দমন করা সম্ভব’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুর্নীতির কারণে রাজনীতি থেকে দূরে সরে গেছে আদর্শ ও নৈতিকতা। তাই যেকোনো মূল্যে আমাদের দুর্নীতি দমন করতে হবে। এই দুর্নীতি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ও চেতনাকে আঘাত করেছে। দুর্নীতি দেশের উন্নয়নকে ব্যাহত করেছে।
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, শুধু আইন দিয়ে দুর্নীতি দমন করা যায় না। দুর্নীতি করলে আইন দিয়ে শাস্তি দেওয়া যায়। তার মানে এই দাঁড়ায় দুর্নীতি আগে করতে হবে, তারপর আইনের প্রয়োগ।
দুর্নীতি দমনে তথ্য অধিকার আইন সম্পর্কে জনগণকে আরও সচেতন করতে হবে এবং এ আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। আইনের সঠিক প্রয়োগে দুর্নীতি কমানো সম্ভব।
‘দুর্নীতি দমনে তথ্য প্রদানে সরকারি তথ্য ভাণ্ডার গড়ে তোলা যেতে পারে। সেই সঙ্গে ছবিযুক্ত জাতীয় পরিচয়পত্র, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও স্বাক্ষরযুক্ত ডাটাবেসের ব্যবহার বাড়াতে হবে। দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। শুধু দুর্নীতিবাজদের শাস্তি দিয়ে সম্ভব নয়, এজন্য প্রয়োজন গণসচেতনতা, দেশপ্রেম এবং তারুণ্যের অঙ্গীকার। প্রতিজ্ঞা করতে হবে আমি দুর্নীতি করবো না, অন্যকে দুর্নীতি করতে দিবো না,’ যোগ করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আদর্শলিপিতে ‘সদা সত্য কথা বলিবা’ আমরা ছোট বেলায় শিখেছি, এটা কিন্তু আমাদের মাইন্ড সেট পরিবর্তন করে দেয়। আমাদের শিশুদের যদি এইসব মূল্যবোধ সম্পর্কে পড়ানো হয়, তাহলে তারা বড় হয়ে দুর্নীতি করবে না। এজন্য আমাদের পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে এসব সিলেবাস অন্তর্ভুক্ত করতে শিক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ করবো।’
‘আমি চেষ্টা করবো নার্সারি থেকে আমাদের পাঠ্য বইয়ে এই রকম আদর্শের কথা লেখা হয়। যেখানে এই রকম আদর্শের সাফল্য কোথায় এবং আদর্শ না মানলে তার পরিণাম কি হয়, সে সম্পর্কে বলা থাকবে,’ যোগ করেন তিনি।
খালেদা জিয়া এতিমের টাকায় দুর্নীতি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই আড়াই কোটি টাকা দুর্নীতির দায়ে ১০ বছর সাজা বেশি হয়নি। তার থেকেও বড় কথা হলো- এটা প্রমাণ হয়েছে যে, দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধারী ব্যক্তিও আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সব দুর্নীতির মূলে হাত দিয়েছি। যার কারণে গুটিকয়েক স্বঘোষিত নেতা বলছেন এই দেশ ঠিকমত চলছে না। বরং তারাই দুর্নীতির মধ্যে ডুবে আছে বলেই তারা এসব বলছে।’
বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিষ্ট ফোরামের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ, কলামিস্ট ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল একে মোহাম্মদ আলী শিকদার (অব), কলামিস্ট সুভাষ সিংহ রায়, ড. মিল্টন বিশ্বাস অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।