পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে নওগাঁ শহরের উকিলপাড়া এলাকায় ওই পুলিশ কর্মকর্তাদের ছুরিকাঘাত করা হয়। এ ঘটনায় নওগাঁ সদর থানায় মামলা হয়েছে।
আহত পুলিশ কর্মকর্তারা হলেন- নওগাঁ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু হানিফ।
গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক ওই সেনা কর্মকর্তার নাম মাহতাব-ই রাজু (৩৭)। তিনি শহরের উকিলপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি বর্তমানে অবসর প্রস্তুতিকালীন ছুটিতে (এলপিআর) রয়েছেন।
তার স্বজনরা জানান, তিনি টাঙ্গাইলে ঘাটাইল ক্যান্টমেন্টে মেজর পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে বাধ্যতামূলক অবসরে যান।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা মাহতাব-ই রাজু বর্তমানে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢাকায় বাস করেন। গত রবিবার তিনি নওগাঁয় আসেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজু পাগলের মতো অকারণে প্রতিবেশি লোকদের গালাগালি করেন। এক পর্যায়ে তিনি তার মাকে মারতে উদ্যত হন। এটা দেখে প্রতিবেশীরা তাকে বাধা দিতে গেলে রাজু উন্মাদের মতো প্রতিবেশীদের বাড়িতে ইট-পাটকেল মারা শুরু করে। এক পর্যায়ে রাজুর মা নাছিমা খাতুন থানায় খবর দেন।
খবর পেয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু হানিফ রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ আসার খবর পেয়ে রাজু বাড়িতে ঢুকে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন। পরে ডাকাডাকি করার এক পর্যায়ে ভেতর থেকে দরজা খুলে দিলে পুলিশ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন ও আবু হানিফ ঘরের ভেতর ঢোকেন। এ সময় ঘরের ভেতরে থাকা রাজু ছুরি দিয়ে ওই দুই কর্মকর্তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করেন। এতে দুজনেই গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন ও অন্য পুলিশ সদস্যরা এসে তাদেরকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করান।
পুলিশ কর্মকর্তাকে ছুরি মেরে জখম করার অভিযোগে রাতেই ওই সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তা করা হয়।
নওগাঁ সদর থানার তত্ত্বাবধায়ক রওশন আরা খানম বলেন, ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুজনেই গুরুতর জখম। পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেনের বুকে ছুরি মারায় তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে রাজধানীর বক্ষব্যাধী হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাই বলেন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উকিলপাড়া এলাকার বাসিন্দা নাছিমা খাতুন থানায় ফোন করে তার ছেলে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করছে বলে অভিযোগ করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর থানার পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন ও এসআই আবু হানিফ ঘটনাস্থলে যান বিষয়টি তদন্ত করার জন্য। ঘটনাস্থলে গেলে রাজু তাদেরকে ছুরি মেরে জখম করে।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি নিয়মিত মামলা হয়েছে। আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।