এছাড়া জমি দখলকারী কোনো ব্যক্তিকে ঋণ না দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
তুরাগ নদকে জীবন্ত সত্তা (লিগ্যাল পারসন) ঘোষণা করে রবিবার হাইকোর্টের এক রায়ে এসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
রায়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাসহ কয়েক দফা নির্দেশনা দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রবিবার নির্দেশনা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাসহ সিদ্ধান্ত জানিয়ে রায় ঘোষণা করেন।
তুরাগ নদ রক্ষায় এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বুধবার রায় ঘোষণা শুরু করে আদালত।
পরদিন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সীমাবদ্ধতা নিয়ে আইনজীবীর বক্তব্য উপস্থাপন ও পর্যালোচনার জন্য সময় দিয়ে রবিবার অসমাপ্ত রায় ঘোষণার দিন রাখা হয়। তুরাগ নদকে জীবন্ত সত্তা ঘোষণা করে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে দেশের সব নদ-নদী-খালের আইনগত অভিভাবক ঘোষণা করছে হাইকোর্ট।
দেশের সব নদ-নদী-খাল-জলাশয় ও সমুদ্র সৈকতের সুরক্ষা এবং তার বহুমুখী উন্নয়নে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন বাধ্য থাকবে বলেও রায়ে উল্লেখ করেছে আদালত।
নির্দেশনায় আদালত নদী দখলকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে কঠিন সাজা ও জরিমানা নির্ধারণ করে অভিযোগ দায়ের, তদন্তের ব্যবস্থা রেখে ২০১৩ সালের জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন সংশোধন করে ৬ মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছে।
পাশাপাশি নদী রক্ষা কমিশন আইনের যেসব সংশোধন প্রস্তাব করেছে, তা অনতিবিলম্বে বিবেচনা করে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। নদী রক্ষা কমিশনকে একটি স্বাধীন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
প্রতিরোধমূলক নির্দেশনায় আদালত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই মাসে এক দিন এক ঘণ্টা করে নদী দূষণের ওপর সচেতনতামূলক ক্লাসের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে।
পাশাপাশি দেশের বড়, মাঝারি ও ছোট শিল্পকারখানার শ্রমিকদের অংশগ্রহণে দুই মাস অন্তর এক দিন এক ঘণ্টা করে নদী বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পূরবী রানী শর্মা ও পূরবী সাহা।
প্রসঙ্গত, একটি ইংরেজি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ‘ঢাকার টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে অবৈধ দখল ও মাটি ভরাট' শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হলে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর হাইকোর্টে রিট করে।