মঙ্গলবার ঢাকার তৃতীয় মানবপাচার দমন ট্রাইবুনালের বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার এই রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-গাজীপুরের বোর্ডবাজার কুনিয়াপাচু এলাকার ঝর্ণা বেগম এবং নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার চাঁনমারা বস্তির মানিক।
বিচারক তাদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস কারাদণ্ডের আদেশ দেয়।
রায় শুনে কাঠগড়ায় দাঁড়ানো দণ্ডিত মানিক কান্নায় ভেঙে পড়েন। আরেক দণ্ডপ্রাপ্ত ঝর্ণা বেগম পলাতক রয়েছেন।
রায়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দারোয়ান আব্দুল মতিন এবং বিশেষ আয়া শিলাকে খালাস দেয়া হয়েছে। শিলাও পলাতক।
ঢাকা মেডিকেল থেকে নবজাতক চুরির অভিযোগে শিশুটির বাবা মনিরুল ইসলাম ২০০৫ সালের ডিসেম্বরে ঢাকার সবুজবাগ থানায় মামলাটি করেন।
ওই মামলায় আসামি ঝর্ণা, মানিক, শিলা, মতিনকে অব্যাহতির সুপারিশ দিয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। আসামিরা তখন ঢাকার পঞ্চম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল থেকে অব্যাহতিও পেয়ে যান।
কিস্তু পরে ২০০৬ সালের ৬ জানুয়ারি খিলগাঁও এলাকায় ঝর্ণা বেগম আট থেকে দশ দিন বয়সী ছেলে নবজাতকসহ আটক হন। ঝর্ণা বেগম তখন জিজ্ঞাসাবাদের সময় স্বীকার করেন, ওই বাচ্চা তার নয়। এ ছাড়া তার হেফাজতে আরও একটি কন্যা নবজাতক আছে রামপুরায়। তখন পুলিশ রামপুরা থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করে।
ঝর্ণা জানান, ছেলে শিশুটি তিনি নিয়ে আসেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মানিক মিয়ার কাছ থেকে। পরে মানিক মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আর কন্যা শিশুটি তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দারোয়ান আবদুল মতিন ও আয়া শিলার কাছ থেকে নিয়ে আসেন বলে পুলিশকে জানান।
এই ঘটনায় দুই নবজাতক চুরি ও পাচারের অভিযোগে ২০০৬ সালের ১২ জানুয়ারি খিলগাঁও থানায় মামলা করেন উপপরিদর্শক (এসআই) এনামুল কবীর।
তদন্ত শেষে খিলগাঁও থানার এসআই আবুল খায়ের ঝর্ণা বেগমসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালের ২৬ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, নবজাতক দুটির প্রকৃত অভিভাবক পাওয়া যায়নি। মামলায় ১৫ জনের মধ্যে নয়জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।
আসামি মানিক ও ঝর্ণা বেগম বাচ্চা দুটি চুরি করার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।
ঝর্ণাকে গ্রেপ্তার করার পর আদালতকে পুলিশ এক প্রতিবেদন দিয়ে জানিয়েছিল, ঝর্ণা বেগম শিশু বাচ্চা সংগ্রহ করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাচার করেন। দীর্ঘদিন ধরে আসামি দুবাই ছিলেন।