বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে গ্রিন বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের উদ্যোগে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শোভাযাত্রাটি বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এর আগে নারী শ্রমিকরা সমাবেশ করেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশের অধিকাংশ কর্মক্ষেত্র নারী বান্ধব নয়। যৌন হয়রানির ঘটনা ছাড়াও পুরুষ সহকর্মীদের মন মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গির কারণে শ্রমজীবী নারীদের নানা ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হতে হয়। দেশের অনেক শিল্প-কারখানায় কর্মপরিবেশ এমন যে টানা কয়েক বছর কাজ করলে নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে।
তারা আরও বলেন, কারখানা পর্যায়ে স্যানেটারি ন্যাপকিন ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভালো না থাকায় কিডনিসহ নানা দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হতে দেখা যায় নারী শ্রমিকদের। কিছু কিছু কারখানায় সুপেয় পানির ব্যবস্থাও থাকে না। অনেক প্রতিষ্ঠানে সন্তানসম্ভবা নারী শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা হয়। তাছাড়া মাতৃত্বকালীন ছুটির সময় বেতন-ভাতা-বোনাস ইত্যাদি সুযোগ থেকেও বঞ্চিত করা হয়।
নারী শ্রমিকদের শোষণ-নিপীড়ন ও বৈষম্যের মধ্যে রেখে দেশের অগ্রগতি ও উন্নয়ন সম্ভব নয় জানিয়ে তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শ্রম আইন থাকলেও কার্যত এর কোনো প্রয়োগ নেই।
শ্রমবাজারে নিয়োজিত মোট শ্রমশক্তির প্রায় অর্ধেক নারী। নারীদের অবরুদ্ধ রেখে কিংবা নিয়ত বৈষম্যের বেড়াজালে আটকে, নারীদের শোষণ করে পরিবার, সমাজ তথা জাতীয় জীবনে প্রত্যাশিত উন্নয়ন অর্জন সম্ভব না, যোগ করেন বক্তারা।
তারা বলেন, নারী শ্রমিকদের সামগ্রিক কল্যাণে মনোযোগী হওয়ার পাশাপাশি তাদের প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করে কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ দিতে হবে।। কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রে সব ধরনের হয়রানি থেকে নারীদের মুক্ত করা গেলে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের শ্রমবাজারের সুনাম বৃদ্ধি পাবে।
গ্রিন বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি সুলতানা বেগমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন- জাতীয় শ্রমিক জোটের কার্যকরী সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস, কেন্দ্রীয় নেতা খাদিজা রহমান, মিসেস সুইটি, ফরিদ উদ্দীন, মো. লিমন প্রমুখ।