‘একটা কথা সকলকে মনে রাখতে হবে, শুধুমাত্র আইন প্রণয়ন করলে নারীর প্রতি বৈষম্য ও সহিংসতা বন্ধ হবে না... আমাদের সমাজে গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। এজন্য নারী ও পুরুষ সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে,’ বলেন তিনি।
শনিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মেহের আফরোজ চুমকি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী ও ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপোয়াস। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ইনচার্জ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সকলকে একটা কথা মনে রাখতে হবে, সমাজের অর্ধেক জনগোষ্ঠী যেখানে নারী, সেখানে তাদেরকে বাদ রেখে কোনো সমাজ গড়ে উঠতে পারে না।
‘সেজন্য, আমাদের সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে….এটি সবচেয়ে জরুরি বিষয়,’ যোগ করেন তিনি।
শিশু ও নারী ধর্ষণের ঘটনা সম্পর্কে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটি অত্যন্ত গর্হিত কাজ। যারা এই ধরনের ঘৃণ্য কাজ করে তারা সমাজের শত্রু ’।
তিনি ধর্ষকদের নাম, ঠিকানা এবং ছবি সঠিকভাবে প্রচার করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান যাতে সর্বস্তরের মানুষ তাদের ঘৃণা করে।
ধর্ষণকে বিশ্বব্যাপী সমস্যা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক্ষেত্রে আইন রয়েছে। কিন্তু এই সমস্যাটি শুধু বাংলাদেশে নয়, উন্নত ও সভ্য দেশেও সমস্যাটি রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী মেয়ে শিশুদের প্রতি বৈষম্য দূর করতে সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এই সমাজকে গড়ে তুলতে হলে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’
দেশের উন্নয়নে নারীরা দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের নারীরা ইতিমধ্যে নিজেদের প্রমাণিত করেছে, যা বিশ্বের অনেক উন্নত ও সভ্য দেশের নারীরাও পারেনি। বাংলাদেশের নারীরা দেখিয়েছে যে তারা পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, নারীদের সাফল্য বাংলাদেশের সর্বক্ষেত্রে বিদ্যমান। তারা এখন শিক্ষা, ক্রীড়া ও সৃজনশীল কর্মে পুরুষদের সমপর্যায়ে রয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, প্রশাসন, বিচার বিভাগ, শিক্ষার পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মতো দেশের সকল ক্ষেত্রে দেশের নারীরা এখন অনেক উচ্চ পদে রয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী নারীর উন্নয়ন ও কল্যাণে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের বিস্তারিত বিবরণ দেন।
ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান উইমেন (আইএসএডব্লিউ) প্রদত্ত ‘লাইফটাইম কনট্রিবিউশন ফর উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট অ্যাওয়ার্ড অর্জন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই পুরস্কার বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল নারীদের জন্য উৎসর্গ করছি।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন ও অর্জনের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করায় বিজয়ীদের মাঝে ‘জয়িতা’ পুরস্কার বিতরণ করেন।
পরে শেখ একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখেন এবং নারী উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।