২০১৬ সালে শরণার্থী ও অভিবাসীদের জন্য নিউইয়র্ক ঘোষণায় নেতৃত্ব দেয়া বাংলাদেশের আলোচনার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে আমরা সক্রিয়ভাবে জড়িত।’
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনের সামাজিক উন্নয়ন এজেন্ডাভুক্ত আলোচনায় বক্তব্যকালে একথা বলেন রাষ্ট্রদূত মোমেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিরাপদ, সুবিন্যস্ত ও নিয়মিত অভিবাসনের ওপর গ্লোবাল কম্প্যাক্ট গ্রহণের জন্য আলোচনার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার জন-কেন্দ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনা ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য নির্মূল করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করছে।
‘সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। সামাজিক উন্নয়নেও সুনির্দিষ্ট সাফল্য অর্জিত হয়েছে। ইউএনডিপির মানব উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশ তিন ধাপ এগিয়ে ১৮৯টি দেশের মধ্যে ১৩৬তম অবস্থানে পৌঁছেছে’, বলেন মাসুদ।
শিশু মৃত্যুহার হ্রাস ও গড় আয়ু ৭২ বছরে উন্নীত হওয়ার বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পয়ঃনিষ্কাশনে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এ সংশ্লিষ্ট সুবিধা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পেরেছে বলেই সরকার এ সাফল্য অর্জন করতে পেরেছে।’
সামাজিক উন্নয়নের এই সাফল্যে সরকারি পদক্ষেপের পাশাপাশি এনজিওসমূহও ভূমিকা রাখছে বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ।
তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে জনসংখ্যার সব বিভাগকে সম্পৃক্ত করে ‘সমগ্র সমাজ’ গঠনে বাংলাদেশ অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা কেবল যুবক, নারী ও শিশুদের ওপর গুরুত্বারোপ করিনি, বয়স্ক ব্যক্তি এবং প্রতিবন্ধীদের ওপরও আলোকপাত করেছি।
রাষ্ট্রদূত মোমেন বলেন, সরকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সমান সম্মান, অধিকার, পূর্ণ অংশগ্রহণ এবং সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে কঠোর পরিশ্রম করছে। যার ফলে উন্নয়ন নীতি ও কর্মসূচিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আমরা ২০১২ সালে অটিজম বিষয়ে রেজ্যুলেশন গ্রহণে সহায়ক ছিলাম।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কল্যাণে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, ‘এবছর ২ এপ্রিল বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্রকে সাথে নিয়ে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে একটি উচ্চ পর্যায়ের ইভেন্ট আয়োজন করে, যেখানে যোগ দেন বাংলাদেশের অটিজম বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণপূর্ব এশিয়া অঞ্চলের শুভেচ্ছা দূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে এটি ছিল একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ।’
রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষে দক্ষতা ও জ্ঞানকে মূল চালিকা শক্তি রূপে গ্রহণ করে রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আর সমাজের সবাইকে সাথে নিয়েই টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সরকার।
জাতিসংঘ মহাসচিবের এজেন্ডা-২০৩০ এর টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বিষয়ক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের উন্নয়ন পদক্ষেপসমূহের কথা তুলে ধরা হয়েছে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ।