জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। মামলার আলামত হিসেবে তার (ওসি মোয়াজ্জেম) দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। ফোনগুলো পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পিবিআই সূত্র।
পিবিআই সদর দপ্তরে মঙ্গলবার বিকালে ওসি মোয়াজ্জেমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওসির মোবাইল ফোনের ফরেনসিক পরীক্ষায় অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। রাফিকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওসির সঙ্গে যারা ছিলেন তাদের সবার মোবাইল ফোন জব্দ করে ফরেনসিক পরীক্ষা করা হবে।
যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে ভুক্তভোগীকে জিজ্ঞাসাবাদ, ভিডিও ধারণ ও ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ এনে দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই।
এদিকে রাফির মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আগামীকাল বৃহস্পতিবার দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ।
মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআইয়ের প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, সোনাগাজীর সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে মামলার অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা ডেকে কথা বলেছেন। অনুসন্ধানের প্রয়োজনে যা যা করণীয় তা করা হবে। অর্থাৎ কোনো আলামত জব্দ করার প্রয়োজন হলে তা করবেন। আমরা সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রেখে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাব। এ মামলায় আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত করে প্রতিবেদন দেব।
নুসরাত হত্যা মামলার তদন্তের বিষয়ে তিনি বলেন, হত্যার রহস্য এরই মধ্যে উদ্ঘাটন করা হয়েছে। হত্যার সঙ্গে জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করার পাশাপাশি আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তদন্ত শেষ করে শিগগির প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।
জানা গেছে, মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করার পর গত ২৭ মার্চ রাফিকে থানায় ডেকে নেন সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। থানায় রাফির জবানবন্দি নেন তিনি।
এ সময় পুরো জবানবন্দির ভিডিও ধারণ করেন ওসি। জবানবন্দি রেকর্ডের সময় তিনি যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেননি। একজন নারী ভুক্তভোগীকে স্পর্শকাতর বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় অবশ্যই নারী পুলিশ সদস্য রাখা উচিত ছিল। এমনকি রাফি মারা যাওয়ার পর রাফিকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল সকালে নুসরাত আলিম শ্রেণির আরবি পরীক্ষার জন্য মাদরাসায় গেলে দুর্বৃত্তরা তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় দগ্ধ নুসরাত পাঁচদিন পর ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।