নুসরাত হত্যায় তাদের সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবাবন্দি দিয়েছেন কামরুন্নাহার মনি ও জাবেদ হোসেন।
শনিবার বিকালে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমদের আদালতে তাদের হাজির করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
কয়েক ঘণ্টার জবানবন্দি রেকর্ডের পর রাত ১০টার দিকে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান পিবিআই এর চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল।
তিনি বলেন, আদালতে এ দু’জন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন যে তারা নুসরাত কিলিং মিশনে সরাসরি জড়িত ছিলেন। নুসরাতের সারা শরীরে কেরোসিন ঢেলে দেন জাবেদ। আর নুসরাতের শরীরে ভালোভাবে কেরোসিন লাগাতে ও আগুন দেয়ার জন্য তাকে চেপে ধরেন মনি।
তাদের এ জবানবন্দিতে নতুন কিছু নামও উঠে এসেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তা উল্লেখ করেনি পিবিআই।
গত ১৫ এপ্রিল কামরুন্নাহার মনিকে সোনাগাজী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৭ এপ্রিল আদালত তাকে সাতদিনের রিমান্ডে পাঠায়। শুক্রবার মনিকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায় পিবিআই। সে সময় মনি কীভাবে নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে তার বর্ণনা দেন।
অপরদিকে, জাবেদকে ১৩ এপ্রিল চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিন থেকে তাকে সাতদিনের রিমান্ড দেন আদালত। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকালে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালত আবার জাবেদের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
নুসরাত হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত এজহারভুক্ত আটজনসহ মোট ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন সাতজন। ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাদরাসা কমিটির সহ-সভাপতি রুহুল আমিনকে পাঁচদিন করে রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যায় নুসরাত জাহান রাফি। মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের উপর কেউ মারধর করেছে এমন সংবাদ দিলে সে ওই বিল্ডিংয়ের চার তলায় যায়। সেখানে মুখোশপরা ৪/৫ জন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। সে অস্বীকৃতি জানালে তারা গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় দুবৃত্তরা।
১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ফেনীর সোনগাজী উপজেলার সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান।