সেই সাথে তিনি বিষয়টি যাচাই করে দেখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স প্রতি বছর সরেজমিনে বহুতল ভবন পরিদর্শন এবং ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দিতে পারে।
সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী এসব নির্দেশনা দেন। বৈঠকে বনানীর এফআর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডে জীবন ও সম্পদহানির ঘটনায় একটি শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে অবহিত করেন।
তিনি বলেন, বিস্তারিত আলোচনার পর প্রধানমন্ত্রী দেশে অগ্নি দুর্ঘটনা কমাতে কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন।
সচিব জানান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে শিল্প ও কারখানার জন্য ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে।
‘প্রধানমন্ত্রী অগ্নি দুর্ঘটনায় জীবন ও সম্পদহানি রোধের লক্ষ্যে দেশের সব বহুতল ভবনের জন্য ওই ব্যবস্থা চালু করতে চান,’ যোগ করেন তিনি।
সেই সাথে শেখ হাসিনা কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় কোনো অবকাঠামো নির্মাণ টেকসই হবে কিনা তা প্রাথমিক স্তরেই ওই এলাকায় গিয়ে যাচাই করে দেখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
তিনি পরিদর্শনের কাজটি নিয়মিতভাবে চালিয়ে যাওয়ার তাগিদ দেন।
জনগণকে ভবন নির্মাণের সময় নির্মাণ বিধি কঠোরভাবে মেনে চলার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নিয়মিত মহড়া দেয়ার প্রতিও জোর দেন।
তিনি বলেন, দেশে জলাধার তৈরি ও লেকগুলো সংরক্ষণের পাশাপাশি ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণের নতুন ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
দেশে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কাছে বহুতল ভবনে ব্যবহারের উপযোগী মাত্র তিনটি মই আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এসবের সংখ্যা বাড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
তিনি ভবনের নকশা করার সময় স্থপতিদের পরিবেশের বিষয়টি মাথায় রাখার কথা বলেন। সেই সাথে জরুরি নির্গমন পথ নিশ্চিত করতে এবং তা সব সময় খোলা রাখার তাগিদ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে অনেক অফিস বৈদ্যুতিক দরজা ব্যবহার করছে যা সাধারণত বিদ্যুৎ না থাকার সময় কাজ করে না। তিনি বিদ্যুৎ না থাকলেও দরজাগুলো যাতে ম্যানুয়ালি কাজ করে সেই ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী বহুতল ভবনে তেরপল রাখার ব্যবস্থা করতে বলেছেন, যাতে আগুনের সময় তা ব্যবহার করে জরুরিভাবে বেরিয়ে আসা যায়।
তিনি কর্তৃপক্ষকে প্রতিটি বিদ্যালয় ও হাসপাতালে বারান্দা রাখার এবং সেগুলো সময় সময় খোলা রাখতে নকশাবিদদের নির্দেশ দিয়েছেন।
সেই সাথে তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রতিটি বহুতল ভবনে একের অধিক, কমপক্ষে দুটি জরুরি নির্গমন পথ রাখতে বলেছেন।
এদিকে, মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১৯’ এবং ‘গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৯’ এর খসড়াগুলো নীতিগতভাবে অনুমোদন করা হয়েছে।
শফিউল আলম জানান, অন্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইনগুলো অনুসরণ করে ‘হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১৯’ এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে এবং এতে নতুন কিছু নেই।
খসড়া আইন অনুযায়ী, নতুন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়টি হবিগঞ্জ জেলায় প্রতিষ্ঠা করা হবে এবং রাষ্ট্রপতি এর আচার্য হবেন।
হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরুতে কৃষি, মৎস ও পশুসম্পদ নিয়ে তিনটি অনুষদ থাকবে। সেই সাথে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এ প্রতিষ্ঠানেও একজন উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, কোষাধ্যক্ষ, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল থাকবে।
গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইনের খসড়া প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নতুন খসড়া আইনটি বিদ্যমান রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইনের অনুলিপি মাত্র।