নয়াদিল্লীর হায়দ্রাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে শেষে দুদেশের মধ্যে এসব সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়। দুদেশের সরকার প্রধানের উপস্থিতিতে চুক্তি সই ও চুক্তিপত্র বিনিময় হয়।
এছাড়া হাসিনা ও মোদি যৌথভাবে তিনটি দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
যেসব বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি হয়েছে সেগুলো হলো- উপকূলীয় অঞ্চলে নজরদারি বিষয়ে এমওইউ, ভারত থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার নিয়ে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি), ত্রিপুরার সাবরুম শহরে পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পের জন্য ফেনী নদী থেকে ভারতের ১.৮২ কিউসেক পানি প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য এমওইউ, বাংলাদেশকে প্রতিশ্রুত ভারতের লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) বাস্তবায়নে চুক্তি, হায়দ্রাবাদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এমওইউ, সংস্কৃতি বিনিময় কর্মসূচি নবায়ন এবং যুব বিষয়ে সহযোগিতা নিয়ে এমওইউ।
চুক্তি ও সমঝোতাপত্র বিনিময়ের পর শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে তিনটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন। যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এলপিজি আমদানিকরণ, ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে বিবেকানন্দ ভবন (শিক্ষার্থী হল) এবং আইডিইবি ঢাকায় বাংলাদেশ-ভারত প্রফেশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে হায়দ্রাবাদ হাউসে মধ্যাহ্নভোজনের আয়োজন করা হয়।
এর আগে দুদেশের নেতাদের মধ্যে একটি ব্যক্তিগত বৈঠক হয়।
এদিকে শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে প্রতিবেশী বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে ‘সর্বোচ্চ গুরুত্ব’ দেয়ার বিষয়টি পুর্নব্যক্ত করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘প্রাণবন্ত কথোপকথন’ হয়েছে।
এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম, ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার রিভা দাশ গাঙ্গুলী উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকেল সাড়ে ৪টায় ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দের সাথেও বৈঠক করবেন।
ওয়ার্ল্ড ইকোনোমি ফোরামে (ডব্লিউইএফ) যোগ দিতে বৃহস্পতিবার সকালে নয়াদিল্লী পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নয়াদিল্লীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ককে ‘সর্বোচ্চ গুরুত্ব’ দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনার দিল্লী পৌঁছানোর ছবিসহ একটি টুইট বার্তা প্রকাশ করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, কৌশলগত সম্পর্কের বাইরে গিয়ে বাংলাদেশ-ভারত (বহুমুখী সম্পর্ক) বিনিময় করছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে নয়াদিল্লীর হায়দ্রাবাদ হাউসে শনিবার সকালে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আগামী রবিবার প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।