তবে বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেও থেমে নেই সামাজিক অনুষ্ঠান। তাই পূর্ব নির্ধারিত বিয়ের অনুষ্ঠান সফল করতে ও কনে আনতে বরদেরকে যেতে হচ্ছে কারো ঘাড়ে চেপে বা কলা গাছের ভেলায় করে। এমনই একটি বিয়ে হলো জৈন্তাপুরে। বন্যার কারণে বরকে অন্যের কাঁধে চেপে কনের বাড়িতে যেতে হলো।
শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের একটি ছবি ভাইরাল হয়। এখন ছবি নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট উজানীনগর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে রুবেল আহমদের বিয়ের দিন ধার্য হয় শুক্রবার (১২ জুলাই)। তারিখ অনুযায়ী যথাসময়ে বরও কনেকে আনতে যান। কিন্তু বৈরি আবহাওয়া কিছুটা বিষণ্ন করলেও শেষ পর্যন্ত দমাতে পারেনি বিয়ের অনুষ্ঠান। বেশ কয়েকজন বরযাত্রী নিয়ে কনের বাড়ি জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট মেঘলি গ্রামের রজব আলীর মেয়ে শামিমা বেগমকে আনতে রওনা দেন রুবেল মিয়া ও তার সঙ্গে থাকা বরযাত্রীরা। এসময় বর পক্ষের সঙ্গী ছিলেন নিজপাট ইউপির ৩নং ওয়ার্ডের জন নন্দিত ইউপি সদস্য হুমায়ুন কবির খান। বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় বর ভিজে যাবেন, তাই বর রুবেলকে নিজ কাঁধে তুলে নেন হুমায়ুন। তার এমন মহানুভবতা দেখে অনেকেই তাকে সাধুবাদও জানান।
স্থানীয় বর যাত্রীরা জানিয়েছেন, বর রুবেল কিছুটা প্রতিবন্ধী। আর এ কারণেই নিজ উদ্যোগেই এটি করেন।
প্রসঙ্গত, অবিরাম বৃষ্টির ফলে জৈন্তাপুর উপজেলার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের অনেক এলাকার বাড়িঘরে বানের পানি ঢুকে পড়েছে। এতে গ্রামীণ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জনসাধারণকে নৌকা ও কলা গাছের ভেলায় করে যাতায়াত করতে হচ্ছে। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ রয়েছে। বন্যায় নিজপাট, জৈন্তাপুর, চারিকাটা, দরবস্ত ও ফতেহপুর ইউনিয়নের বেশির ভাগ গ্রামে পানি প্রবেশ করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বন্যা কবলিত নিজপাট ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে নিম্নাঞ্চল এলাকায় বসবাসরত মানুষদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
জৈন্তাপুর উপজেলা নিবার্হী অফিসার বিশ্বজিৎ কুমার পাল জনান- বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করতে উপজেলা প্রশাসন সতর্ক রয়েছে। ত্রাণ সহায়তার জন্য উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।