প্রায় আট বছর আগে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) এক রিট আবেদনে উচ্চ আদালত বুড়িগঙ্গার পানি দূষণ রোধে রায় দিয়েছিল।
সেই সংগঠনের পক্ষে করা এক সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালত আগামী ২০ মে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে।
আদালতে এইচআরপিবি’র আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ এস এম নাজমুল হক।
আদেশের পরে মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, জনস্বার্থে করা এক রিট মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বুড়িগঙ্গার পানি দূষণ রোধে ২০১১ সালে আদালত অনেকগুলো নির্দেশনা দিয়েছিল। বুড়িগঙ্গার ভেতরে যে সমস্ত সুয়ারেজ লাইন আছে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল লাইন আছে সেগুলো ছয় মাসের মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশের পাশাপাশি বুড়িগঙ্গার তীরে যাতে ময়লা আবর্জনা ফেলতে না পারে সে জন্য সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করার জন্য বলা হয়েছিল রায়ে।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু সংশ্লিষ্টরা এই নির্দেশনাগুলো পুরোপুরি পালন না করায় এ সম্পূরক আবেদন করা হয়েছিল। শুনানি শেষে আদালত রায়ে যেসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল, তা প্রতিপালনে সংশ্লিষ্টরা কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে সে ব্যাপারে দুই সপ্তাহের মধ্যে একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে।’
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিআইডব্লিটিএ-এর চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিআইডব্লিউটিএ-এর পরিচালক (পোর্ট অ্যান্ড ট্রাফিক), ঢাকার জেলা প্রশাসক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর, হাজারীবাগ, লালবাগ, ডেমরা ও কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এ প্রতিবেদন দিতে হবে।
উল্লেখ্য, বুড়িগঙ্গার পানি দূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে ২০১০ সালে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে একটি রিট করা হয়েছিল। সে রিটের শুনানি শেষে তিন দফা নির্দেশনা দিয়ে ২০১১ সালের ১ জুন রায় দিয়েছিল হাইকোট।
বুড়িগঙ্গায় সংযুক্ত সব পয়ঃপ্রণালীর লাইন (স্যুয়ারেজ) ও শিল্পকারখানার বর্জ্য নিঃসরণের লাইন এক বছরের মধ্যে বন্ধ করতে ওয়াসার চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়া হয়। প্রতি মাসে নদীতে বর্জ্য ফেলা রোধে নদীর দুই পাড়ে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান করতে ঢাকা সিটি করপোরেশনকে নির্দেশ দেয়া হয়।
এছাড়া বিশেষ দলের মাধ্যমে নদী তীরের বর্জ্য অপসারণের নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, নদী তীরে সিটি করপোরেশনের কোনো ভ্যান বা গাড়ি ময়লা ফেলতে পারবে না। একই সঙ্গে নদী তীরবর্তী এলাকায় সাইনবোর্ড ও প্লাকার্ড স্থাপন করতে হবে, যাতে আদালতের রায় সম্পর্কে জনগণ জানতে পারে।