রবিবার দুপুরে বরগুনা জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান মিন্নির জামিন বাতিলের বিষয়ে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে এ নির্দেশনা দেন।
এর আগে ৮ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার সাক্ষীদের হুমকি দেয়ার অভিযোগে রাষ্ট্রপক্ষ মিন্নির জামিন বাতিলের আবেদন করেন।
মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, রিফাত হত্যা মামলায় সাক্ষীদের হুমকি দেয়ার অভিযোগে ৮ জানুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ মিন্নির জামিন বাতিলের আবেদন করেন। পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত মিন্নির জামিন কেন বাতিল করা হবে না সে মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। ১৫ জানুয়ারি আমরা নোটিশের জবাব দিলে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে জামিন বাতিলের শুনানি পিছিয়ে ২ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়। রবিবার উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আগামী সাত দিনের মধ্যে বরগুনা সদর থানার ওসিকে (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) ঘটনা তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘মিন্নি সাক্ষীদের হুমকি দিয়েছে এটা হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই না। আমরা আশা করি পুলিশ প্রশাসন সঠিক তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করবেন।’
গতবছর ১ সেপ্টেম্বর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুই ভাগে বিভক্ত অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয় পুলিশ। একই সাথে রিফাত হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি নয়ন বন্ড ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। অন্যদিকে ৮ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বরগুনার শিশু আদালত।
এ মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মো. মুসা এখনও পলাতক। এছাড়া রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি ও অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামি প্রিন্স মোল্লা উচ্চ আদালতের আদেশে এবং বরগুনার শিশু আদালতের আদেশে মারুফ মল্লিক, আরিয়ান হোসেন শ্রাবণ, মো. নাজমুল হাসান এবং রাতুল শিকদার জয় জামিনে রয়েছে।
গত বছরের ২৬ জুন সকাল সোয়া ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে রিফাতকে ওইদিনই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহমেদ ওরফে নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।