বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা উপস্থিতিতে বুধবার এ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় বলে বাংলাদেশের হাইকমিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে শুক্রবার জানানো হয়েছে।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীমের বিশেষ উদ্যোগে পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্যেই প্রথম জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের জন্য নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হলো।
নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ধন্যবাদ জানিয়ে সাইদা মুনা তাসনীম বলেন, ‘গত বছর আমরা যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশিদের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণের প্রক্রিয়া শুরু করার ব্যাপারে যে অঙ্গীকার করেছিলাম তা আজকের নিবন্ধন কার্যক্রম উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে পূর্ণ হলো।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশিরা এখন ঘরে বসেই জাতীয় পরিচয়ত্রের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। প্রাপ্ত আবেদনের তথ্য যাচাই করার পর আবেদনকারীর হাতের ছাপ এবং আইরিশ গ্রহণের জন্য দূতাবাসে একটি হেল্প ডেস্ক খোলা হবে। এ হেল্প ডেস্ক থেকে সব তথ্য নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে দেয়ার পর জাতীয় পরিচয়পত্র সংশ্লিষ্ট দেশের হেল্প ডেস্কের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।’
উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আবেদনকারীকে জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারাবাহিকতা রক্ষা করেই মুজিব বর্ষে যুক্তরাজ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন শুরু হলো।
এটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের শুরুতে বাংলাদেশি-ব্রিটিশদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর একটি বিশেষ উপহার, বলেন তিনি।
হাইকমিশনার বলেন, এ বছর বাংলাদেশ হাইকমিশন ২৩ মার্চ থেকে ‘মুজিব বর্ষ বিশেষ কন্স্যুলার সেবা সপ্তাহ’ পালন করবে। তখনই নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া সাপেক্ষে লন্ডনে প্রথম পর্যায়ে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে।
হাইকমিশনার বলেন, যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশিদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশন গত বছর নির্বাচন কমিশনকে একটি চিঠি লিখে। এরপর হাইকমিশনেরই অনুরোধে গত জুলাই মাসে নির্বাচন কমিশন জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের সম্ভাব্যতা যাচাই এবং যুক্তরাজ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের জন্য একটি পাইলট প্রকল্প চালুর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী এবং নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর ঢাকার নির্বাচন কমিশন ভবন থেকে আলোচনায় অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন প্রকল্পের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার সাইদুল ইসলাম জাতীয় পরিচয়পত্রের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধনের জন্য আবেদনকারীর বৈধ পাসপোর্টের ফটোকপি, বিদেশি পাসপোর্টধারী হলে দ্বৈত নাগরিকত্ব সনদের ফটোকপি বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতিপত্র, বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে শনাক্তকারী একজন প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকের পাসপোর্টের কপি, বাংলাদেশে বসবাসকারী রক্ত-সম্পর্কের কোনো আত্মীয়ের নাম, মোবাইল নম্বর ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরসহ অঙ্গীকারনামা, বাংলাদেশে কোথাও ভোটার হননি মর্মে লিখিত অঙ্গীকারনামা এবং সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের প্রত্যয়নপত্র লাগবে।