কায়সারের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে করা আপিল আবেদনের ওপর শুনানি শেষে মঙ্গলবার আপিল বিভাগ এ রায় দেন।
যুদ্ধাপরাধী কায়সারের বিরুদ্ধে আনীত ১৪ অভিযোগের সাতটিতে মৃত্যুদণ্ড, পাঁচটিতে যাবজ্জীবন, একটিতে ১০ বছর ও আরেকটিতে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেন ট্রাইবুনাল। আপিল বিভাগ সাতটির মধ্যে তিনটিতে মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন, বাকি চারটিতে যাবজ্জীবন দিয়েছেন।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন-বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আসা এটি নবম মামলা। আজ রায়ের মাধ্যমে এর চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হলো।
এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর কায়সারের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে করা আপিলের ওপর রাষ্ট্র ও আসামি উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য ১৪ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়।
আদালতে ওই দিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
অন্যদিকে, কায়সারের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, আইনজীবী এস এম মো. শাহজাহান। তাদের সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট শিশির মোহাম্মদ মনির ও ব্যারিস্টার তানভীর আহমেদ আল আমিন।
২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় সৈয়দ কায়সারের মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে আপিল আবেদন করা হয়। সৈয়দ কায়সারের পক্ষে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন তুহিন আপিল আবেদনটি করেন। আপিলে খালাসের আরজিতে ৫৬টি যুক্তি তুলে ধরা হয়। ৫০ পৃষ্ঠার মূল আপিলের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নথি সংযুক্ত করা হয়।
দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকার পর গত ১০ জুলাই সর্বোচ্চ আদালতে এ মামলার শুনানি শুরু হয়। যুক্তি উপস্থাপন শেষে গত ৩ ডিসেম্বর তা রায়ের পর্যায়ে আসে।
২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর তৎকালীন ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কায়সারের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজের নামে ‘কায়সার বাহিনী’ গঠন করে অপরাধ সংঘটিত করেন হবিগঞ্জ মহকুমার রাজাকার কমান্ডার ও শান্তি কমিটির সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার।