যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় মিয়ানমারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে এমন দেশসমূহ যেন চুক্তি অনুযায়ী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের ওপর একযোগে আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করে।
এছাড়া বাংলাদেশ আরও জানিয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ওপর আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করতে হবে, যাতে তারা রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধ করে এবং তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন সহজতর করার জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করে।
মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন সিনেটর ক্রিস্টফার মার্ফি ও যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএইড) অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অ্যাম্বাসেডর মার্ক গ্রিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং এসব বিষয়ে আলোচনা করেন।
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের পাশে থাকার আশ্বাস দেন সিনেটর মার্ফি।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ফিকে পরামর্শ দেন যে, মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর যারা নির্যাতন চালিয়েছিল ও ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছিল, তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বিষয়ক রেজ্যুলিউশন জারি করতে পারে মার্কিন কংগ্রেসের উভয় কক্ষ।
তিনি বলেন, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ১৯৯০ এর দশকে যখন আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল তখন কিছু রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়েছিল।
তবে এ সময় তারা রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর চুক্তি বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি, বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এদিকে ইউএসএইড বলেছে, তারা রোহিঙ্গাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে।
ইউএসএইডের অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের সঙ্গে বৈঠককালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের পাশে থাকার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, সমস্যাটি মিয়ানমার সৃষ্টি করেছে এবং তাদেরকেই এর সমাধান করতে হবে।
মার্ক গ্রিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান শুধু বাংলাদেশের উদ্বেগের বিষয় নয়, বরং এটি বিশ্ব সম্প্রদায়েরও একটি দায়িত্ব।
তিনি বলেন, ইউএসএইড রোহিঙ্গাদের ও স্থানীয় বাংলাদেশি সম্প্রদায়কে আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে।
নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে উদারতা ও সমবেদনা প্রদর্শনের জন্য বাংলাদেশের সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন রাষ্ট্রদূত মার্ক গ্রিনকে জানান, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও সহায়তাকারী সংস্থার সমন্বয়ে বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে এক লাখ রোহিঙ্গাকে স্থানান্তরের জন্য ভাষানচর দ্বীপকে বসবাস উপযোগী করেছে।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন।