বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে মঙ্গলবার রিয়াদের রেডিসন হোটেলে এ বিষয়ে এক ব্রিফিং এর আয়োজনকালে রাষ্ট্রদূত এ আহ্বান জানান।
দূতাবাসের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রিয়াদে নিয়োজিত বিভিন্ন দেশের প্রায় ৬০ জন রাষ্ট্রদূত এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ বলেন, বাংলাদেশ প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিককে আশ্রয় দিয়েছে, কক্সবাজারের বিশাল এলাকায় তাদের আশ্রয়ের পাশাপাশি তিন বেলা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিকতা প্রদর্শন করে তাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিলেও বাংলাদেশের মতো একটি জনবহুল দেশে ১২ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিককে আশ্রয় দেয়া ও খাবারসহ অন্যান্য সাহায্য সহযোগিতা প্রদান বিরাট চ্যালেঞ্জের বিষয়।
রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গাদের সমস্যা নিয়ে ইতিমধ্যে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ও মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনে রেজুলেশন গ্রহণ করা হয়েছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেও বিষয়টি অনেকবার আলোচিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি ওআইসির শীর্ষ সম্মেলনে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
গোলাম মসীহ বলেন, মিয়ানমার ইতোমধ্যে তাদের দেশের নাগরিকদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশের সাথে চুক্তি করা সত্বেও রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নিচ্ছে না। মিয়ানমার বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে চুক্তি বাস্তবায়ন দীর্ঘায়িত করছে এবং চুক্তি বাস্তবায়নে পরিষ্কারভাবে অনীহা প্রকাশ করছে।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ অসহযোগিতা করছে বলে মিয়ানমার অপপ্রচার চালাচ্ছে যা কোনোভাবেই সঠিক নয়।
রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৫ দফা দাবি মেনে নেয়ার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানান, যার মধ্যে রোহিঙ্গাদের দ্রুত নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে নেয়া এবং কফি আনান কমিশনের সুপারিশ পূর্ণ বাস্তবায়ন করার বিষয় উল্লেখ রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ অবিলম্বে সকল রোহিঙ্গা নাগরিককে স্বদেশে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান এবং এ ব্যাপারে কূটনৈতিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি এ বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতার জন্য সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য প্রদান করেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক আবাসিক প্রতিনিধি খালেদ খলিফা। তিনি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত রাষ্ট্রদূতরা বাংলাদেশের উদ্যোগের বিষয়ে স্বাগত জানান এবং এ বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
এ সময় দূতাবাসের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।