সানেমের (সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং) ইন্টারনেটভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম ‘সানেম নেটিজেন ফোরাম’র মঙ্গলবার সন্ধ্যার সপ্তম পর্বে অংশ নিয়ে তারা এ কথা বলেন।
সানেমের নির্বাহী পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হানের পরিচালনায় আলোচনায় জুমের মাধ্যমে বিভিন্ন অঙ্গনের প্রায় ৫০ ব্যক্তি অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়াও সানেম টিমে ছিলেন সানেমের গবেষণা পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, একই বিভাগের প্রভাষক ও সানেমের গবেষণা ফেলো মাহতাব উদ্দিন, গবেষণা সহযোগী ইশরাত শারমীন, মীর আশরাফুন নাহার ও ফাবিহা বুশরা।
সূচনা বক্তব্যে প্রথমেই দেশে লকডাউন শিথিল করার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘লকডাউন তুলে দেয়ার সিদ্ধান্তটি সুষ্ঠু পরিকল্পনার অধীনে করা হয়নি। প্রতিদিন যখন সংক্রমণের এবং মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে তখন লকডাউন শিথিল করা কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘লকডাউন শিথিল করার ফলে করোনাভাইরাস রোগের বিস্তার ঘটলে যে অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষতি হবে সেটি অর্থনীতি পুনরায় চালু করে পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না। উল্টো, পরবর্তীতে আরও কঠোর লকডাউন আরোপ করতে হতে পারে।’
তবে রোগের বিস্তারের ওপর ভিত্তি করে দেশকে কয়েকটি জোনে ভাগ করার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে অর্থনীতিবিদ রায়হান বলেন, এ ধরনের নীতি লকডাউন শিথিলের আরও আগে গ্রহণ করা দরকার ছিল।
ড. রায়হান বলেন, ‘বর্তমান সংকটের ফলে এটি স্পষ্ট যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তার মতো খাতগুলোতে আমাদের সরকারি ব্যয় অনেক বেশি বাড়াতে হবে।’
আগামী বাজেটে প্রণোদনা প্যাকেজের বাস্তবায়ন ও এটি তদারকির ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘এটি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যাতে দরিদ্র জনগোষ্ঠী এ প্রণোদনা প্যাকেজের সুফল পায়।’
আসন্ন বাজেট প্রসঙ্গে নিয়ে আলোচনা করে ড. রায়হান প্রস্তাবিত বাজেট এবং মূল বাজেটের পার্থক্য তুলে ধরে বলেন, ‘দেখা গেছে যে প্রস্তাবিত বাজেটের শুধু ৭৭-৭৮ শতাংশ বাস্তবায়িত হয় এবং এ সংক্রান্ত তথ্য বাজেটের এক থেকে দেড় বছর পরে পাওয়া যায়।’
গত এক দশক ধরে বাজেটে মাত্র ৪-৫ শতাংশ ঘাটতি বজায় রাখা গেছে। তার অন্যতম কারণ স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে খুবই সামান্য বরাদ্দ করা হয়েছে। আসন্ন বাজেটে এ ধারা অনুসরণ করা যাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।