মঙ্গলবার সকালে ‘সুপ্রভাত পরিবহনের’ ধাক্কায় নিহত হন রাজধানীর ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের (বিইউপি) শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আরিফ আহমেদ চৌধুরীর ছেলে।
গুলশান থানার এসআই জাহাঙ্গীর জানান, সকাল ৭টা ১৫ মিনিটের দিকে ‘সুপ্রভাত পরিবহনের’ একটি বাস আবরারকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর সাথে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইনডেপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন।
এদিকে কয়েক ঘণ্টা ধরে রাস্তা অবরোধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ। কুঁড়িল বিশ্বরোড থেকে ভাটারা পর্যন্ত সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজট।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ঘাতক বাস চালকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন। যাকে দুর্ঘটনার পরপরই আটক করে পুলিশ।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নবনির্বাচিত মেয়র আতিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন তিনি।
এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বাস চালকের সর্বোচ্চ শাস্তির পাশাপাশি ওই এলাকায় একটি পদচারী সেতু নির্মাণের দাবি জানান। মেয়র তাদের দাবি মানার আশ্বাস দেন।
এদিকে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা আটক বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা আগুন নেভায়।
আন্দোলনরতরা আট দফা দাবি জানিয়েছে। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে- পরিবহন সেক্টরকে রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত করা, প্রতিমাসে চালকদের লাইসেন্সসহ সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেক করা, ফিটনেসবিহীন বাস ও লাইসেন্সবিহীন চালককে দ্রুততম সময়ে অপসারণ করা, ঝুঁকিপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সকল স্থানে আন্ডারপাস, স্পিড ব্রেকার এবং ফুট ওভার ব্রিজ নির্মাণ, সড়ক হত্যার সাথে জড়িত সকলকে সর্বোচ্চ আইনের আওতায় আনতে চলমান আইনের পরিবর্তন, দায়িত্ব অবহেলাকারী প্রশাসন ও ট্রাফিক পুলিশকে স্থায়ী অপসারণ করে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রতিযোগিতামূলক গাড়ি চলাচল বন্ধ করে নির্দিষ্ট স্থানে বাসস্টপেজ এবং যাত্রী ছাউনির ব্যবস্থা গ্রহণ ও শিক্ষার্থীদের যানবাহনে চলাচলে হাফ পাস অথবা আলাদা বাস সার্ভিস চালু করা।
সরকারের পক্ষ থেকে তাদের দাবি আদায়ের ব্যাপারে নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।