মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ, মামলা তুলে নেয়ার জন্য ধর্ষকের পরিবারের পক্ষ থেকে হুমকি দেয়া হয়েছে। নইলে ওই কিশোরীকে এসিড মেরে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। জীবন বাঁচাতে মেয়েটি এখন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
ভিকটিমের পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ১৪ বছর বয়সী কিশোরীকে বেশ কয়েক বছর ধরে মধ্য গৌরিপুর মহল্লার কালা মিয়ার ছেলে বখাটে স্বপ্ন মিয়া (২২) স্কুলে যাতায়াতের পথে উত্যক্ত করত। একপর্যায়ে মেয়েটিকে তার পরিবার স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। তবু বখাটে স্বপ্ন মিয়ার অত্যাচার থেকে সে রেহাই পায়নি।
প্রায় দেড় মাস আগে যাতায়াতের পথে বখাটে স্বপ্ন মিয়া যৌন হয়রানি করার চেষ্টা করলে মেয়েটি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে বলে সাফ জানিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে কৌশলে মেয়েটির ঘরে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে সে। সকালে মেয়েটি তার মাকে ঘটনাটি জানায়। মেয়েটির মা-বাবা ও ভাই স্থানীয় বিএনপি নেতা বাচ্চু মিয়াকে জানালে তিনি সালিশ করে বিষয়টি মীমাংসার জন্য আশ্বাস দেন। কিন্তু সালিশে ধর্ষকের পক্ষের লোকজন কেউ আসেনি।
পরে মেয়েটির ভাই বাদী হয়ে শেরপুর সদর থানায় মামলা করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ধর্ষক ও তার সহযোগীরা বাদীকে বাড়িতে এসে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিলে সদর থানায় আরেকটি মামলা করা হয়।
এরপর স্থানীয় পৌরসভার কাউন্সিলর আব্দুল মালেক ধর্ষক ও ভিকটিমের আত্মীয়-স্বজনকে নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ৭ লাখ টাকা দেনমোহর ও মেয়ের নামে ৪ কাঠা জমি লিখে দিয়ে তাকে বিয়ে করবে স্বপ্ন। কিন্তু কিছুদিন পর স্বপ্ন মেয়ের ভাইকে মামলা তুলে নিতে বলে, নইলে তার বোনকে এসিড মেরে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়। এ ঘটনার পর থেকে ওই স্কুলছাত্রী এলাকা ছেড়ে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
ধর্ষণের শিকার কিশোরী বলেন, ‘আমি স্বপ্নের শাস্তি চাই, আমার আর কোনো দাবি নেই।’
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরপুর সদর থানার ওসি (তদন্ত) মো. আলমগীর হোসেন শাহ বলেন, ‘ইতিমধ্যে ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে দেখছি। আসামিদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ কাজ করছে। বারবার অবস্থান পরিবর্তন করায় আসামিদের ধরা যাচ্ছে না। তবে আমরা আশাবাদী খুব দ্রুত আসামি ধরা সম্ভব হবে।’