মেধাবী বাঙালিদের বাড়ি থেকে চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে ধরে নিয়ে নৃশংসভাবে নির্যাতন ও হত্যা করা হয়। পরে তাদের মরদেহ রাজধানীর রায়েরবাজার ও মিরপুরসহ বিভিন্ন বধ্যভূমিতে ফেলে দেয়া হয়।
পাকিস্তানি বাহিনী তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আল বদর ও আল শামস বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ঠাণ্ডা মাথায় এ গণহত্যা চালায়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ যাতে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে।
জাতির মেধাবী সন্তানদের লাশ পরে মিরপুর ও রায়েরবাজারসহ অন্যান্য স্থানে পাওয়া যায়।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে ছিলেন অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, ড. ডালিম চৌধুরী, অধ্যাপক মুনিরুজ্জামান, ড. ফজলে রাব্বি, সিরাজুদ্দিন হোসেন, শহীদুল্লাহ কায়সার, অধ্যাপক জিসি দেব, জেসি গুহ ঠাকুর্তা, অধ্যাপক সান্তোষ ভট্টাচার্য, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেব, নিজামুদ্দিন আহমেদ, এসএ মান্নান, এএনএম গোলাম মুস্তফা, সৈয়দ নাজমুল হক ও সেলিনা পারভিন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতির সেই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করা হচ্ছে।
মিরপুর ও রায়েরবাজারের স্মৃতিস্তম্ভ ও শহীদবেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সেমিনার, আলোচনাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার সকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পৃথকভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। পরে শহীদ পরিবারের সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। সেই সাথে সর্বস্তরের মানুষ মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এবং রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
এছাড়া সকালে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে।
বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন দিবসটি উপলক্ষে সেমিনার ও আলোচনাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করছে।
এদিকে, দিবসটির মর্যাদা রক্ষার্থে অনুষ্ঠান পালনে মাইক ও লাউডস্পিকার ব্যবহার না করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সরকার।