‘এটা খুবই দুঃখজনক যে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ এখন বিশ্বব্যাপী সমস্যা হয়ে উঠেছে। প্রকৃতপক্ষে যারা জঙ্গিবাদে জড়িত তারা কেবল জঙ্গি, তাদের কোনো ধর্ম, দেশ ও সীমানা নেই, তারা কেবল জঙ্গি, এটাই সত্য। এই দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা বাংলাদেশকে এসব থেকে মুক্ত রেখে এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে চাই’, বলেন তিনি।
বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশ ক্ষুধা থেকে মুক্ত হয়েছে। দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে হবে। দেশে বর্তমানে ২১ শতাংশ দারিদ্র্য এবং ১১ শতাংশ অতি-দারিদ্র্য রয়েছে। আমরা দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়তে চাই। সরকার সেই লক্ষ্যেই কাজ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের উন্নয়ন করতে চায়। ‘এটাই আমাদের কর্তব্য ও আমাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ।’
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে। ‘বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষ যেকোনো ধর্মীয় উৎসব পালন করে।’
‘সকল ধর্মের মানুষ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান করতে পারে, তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের কর্তব্য। এটাই ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িকতা’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ এবং কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল সেটা সৃষ্টিকর্তা নির্ধারণ করবেন। সৃষ্টিকর্তা মানুষকে সে দায়িত্ব দেননি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বাংলাদেশের সকল জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় রীতিনীতি মর্যাদা ও আন্তরিকতার সাথে পালন করবে। ‘সবার মধ্যে সেই সহিষ্ণুতা ও ভাতৃত্ববোধ থাকবে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য, আমার তার জন্য চেষ্টা করছি।
অবহেলিত না ভেবে সকলকে নিজ নিজ ধর্ম পালনের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ভূমিকা পালন করছে, আমরা এমনটাই দেখতে চাই।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলিপ বড়ুয়াও বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, সংসদ সদস্য দিপঙ্কর তালুকদার, বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সভাপতি, আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ, সাক্ষ্যমনি বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ, নব শালবন বিহারের অধ্যক্ষ, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এবং বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ড. কনক কান্তি বড়ূয়া উপস্থিত ছিলেন।