এই নির্দেশনাকে স্বাস্থ্যসেবায় দুর্নীতি সহায়ক আখ্যায়িত করে অবিলম্বে প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
মঙ্গলবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘নির্দেশনা অনুযায়ী এখন থেকে সকল সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে গবেষণা, জরিপ ও অন্যকোনো উদ্দেশ্যে তথ্য বা সংবাদ সংগ্রহে অনুমতি গ্রহণের বাধ্যবাধকতা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। যা বর্তমান সময়ে অচিন্তনীয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃপক্ষের ঔপনিবেশিক ও নিবর্তনবাদী মানসিকতার মাধ্যমে অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিতে সরকার ঘোষিত ও আইনগতভাবে প্রতিষ্ঠিত নাগরিক অধিকার নিশ্চিতের অপ্রতিরোধ্য অন্তরায় সৃষ্টি করবে।
‘শুধু তাই নয়, হাসপাতালের তথ্যের ‘বস্তুনিষ্ঠতা’ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সম্মতি গ্রহণের যে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে, তা যেমন স্বাস্থ্য খাতে সকল প্রকার গবেষণা ও তথ্য প্রকাশের দ্বার রুদ্ধ করবে, তেমনি এ খাতে সকল প্রকার অনিয়ম, দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় সম্পদের আত্মসাৎ ও অপচয়ের সুরক্ষা দেবে। আপাতদৃষ্টিতে এটাকে তথ্য যাচাই করার মত হাস্যকর যুক্তি হিসেবে উল্লিখিত হলেও প্রকৃত অর্থে তা সংঘটিত বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্যই এ ধরনের নির্দেশনা জারি করা হয়েছে বলে মনে করা অমূলক নয়,’ যোগ করেন তিনি।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসাপাতালের কেনাকাটায় লোমহর্ষক দুর্নীতি ও অবিশ্বাস্য অনিয়মের ঘটনার তথ্য গণমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে প্রকাশিত হয়েছে। সাধারণ মানুষের আস্থা ফেরাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন সময়ে উত্থাপিত অভিযোগসমূহের যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা উচিৎ মনে মন্তব্য করে সংস্থাটি।
অবিলম্বে নির্দেশনাটি প্রত্যাহার করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহনশীলতা’ নীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নির্দেশনার উল্লিখিত ধারাগুলো বাতিলের দাবি জানায় টিআইবি।
‘সরকারি হাসপাতালের দর্শনার্থী ব্যবস্থাপনা’ শিরোনামের নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘রোগীর নিরাপত্তা, গোপনীয়তা ও হাসপাতালের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার মতো অপরিহার্য বিষয়সমূহ যথা নিয়মে পরিপালিত হবে, এটা আমাদের সকলের কাম্য। কিন্তু তা করতে গিয়ে হাসপাতালের সেবার মান সংক্রান্ত বিষয়ে গবেষণার জরিপ বা অন্য উদ্দেশ্যে তথ্য সংগ্রহের ওপর বাধা-নিষেধ আরোপ এবং অনুমতি ছাড়া হাসপাতালের অভ্যন্তরের রোগী বা স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের স্থিরচিত্র বা ভিডিও ধারণের নিষেধাজ্ঞার মতো নির্দেশনা অবিবেচনা প্রসূত।’