মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনের সমাপনী সেশনে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এমন নয় যে দেশের কোনো হাসপাতালে রোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছেন না। আজ পর্যন্ত ৬০ শতাংশ বেড পূর্ণ হয়েছে এবং এখনও ৪০ শতাংশ বেড খালি রয়েছে। করোনা রোগীদের জন্য আমরা ১৪ হাজার বেড নির্দিষ্ট করে দিয়েছি।’
মন্ত্রী বলেন, কোভিড -১৯ রোগীদের জন্য উচ্চ-প্রবাহের অক্সিজেন লাইন প্রয়োজন। সরকার এক হাজার উচ্চ-প্রবাহের অক্সিজেন সিস্টেম এবং ১০ হাজার নতুন অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের হোটেল ও খাদ্য ব্যয় সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘অভিযোগগুলো সঠিক নয়, কারণ ৫০টি হোটেলে প্রায় ৩ হাজার ৭০০ লোক একমাস অবস্থান করেছেন। তাদের জন্য ৫০০ টাকা খাদ্য ব্যয় হিসাবে দেয়া হয়েছিল। দিনে তিনবার খাবারের জন্য- সকাল দুপুর ও রাতের খাবারের জন্য। আর প্রতিটি রুমের ভাড়া প্রতিদিনের ভাড়া ছিল এক হাজার ১০০ টাকা ।’
ব্যয়গুলো এত বেশি ছিল না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘যে খাদ্য ব্যয় (অভিযোগে) বলা হয়েছিল, তা সঠিক নয়।’
জাহিদ মালেক বলেন, এখন ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের (পিপিই) মান সম্পর্কে কোনো অভিযোগ নেই। সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে ৩০ লাখ পিপিই পাঠিয়েছে বলেও জানান তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখন প্রতিটি বেসরকারি হাসপাতালে (করোনায় আক্রান্তদের) চিকিৎসা করা হচ্ছে, যদিও তাদের সার্ভিস চার্জ কিছুটা বেশি। তবে সরকার বেসরকারি মেডিকেল হাসপাতালের সার্ভিস চার্জ ঠিক করে দেবে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, প্রথমদিকে চিকিৎসার জন্য ভেন্টিলেটর দরকার ছিল, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ভেন্টিলেটরগুলোর দরকার নেই। ‘আমরা প্রায় ৪০০টি ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করেছি, যার ৫০টিও ব্যবহার করা হয়নি।’
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে একদিনে রেকর্ড ৬৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এছাড়া আরও ৩৬৮২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।
তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ৬৬টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৮ হাজার ৮৬৩টি। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৮ হাজার ৪২৬টি। মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৭ লাখ ৬৬ হাজার ৪৬০টি।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৬৮২ জনসহ দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৪৫ হাজার ৪৮৩ জন। নতুন করে আরও ৬৪ জনের মৃত্যুর মধ্যদিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮৪৭ জনে।
গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯.৯৮ শতাংশ। আর মোট পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৮. ৯৮ শতাংশ। আর শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১.২৭ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৬৪ জনের মধ্যে পুরুষ ৫২ এবং নারী ১২ জন। হাসপাতালে মারা গেছেন ৫১ জন এবং বাড়িতে ১৩ জন। ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন সর্বোচ্চ ৩১ জন।
এদিকে, করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ১৮৪৪ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৯ হাজার ৬৪০ জন। সুস্থতার হার ৪০.৯৮ শতাংশ।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেশে নতুন করে এ ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।