মঙ্গলবার মুক্তিযোদ্ধাদের সনদ নিয়ে করা রিটের শুনানিতে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশনা দেন বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আদালত বলেছে, কোনো ব্যক্তি জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ভুয়া সনদের মাধ্যমে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করতে পারেন। কিন্তু তিনি তো মুক্তিযোদ্ধা নন। এ ধরনের ব্যক্তির কারণে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ শব্দের আগে ‘ভুয়া’ শব্দটি ব্যবহার করলে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়।”
আদালত সতর্ক করে বলেছে, ‘‘জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের নামের আগে ‘ভুয়া’ শব্দটি ব্যবহার করা যাবে না। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী-কর্মকর্তা হোক বা গণমাধ্যমের কোনো কর্মী হোক বা প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক মিডিয়া হোক- কেউ যেন ‘মুক্তিযোদ্ধা’ শব্দের আগে ‘ভুয়া’ শব্দটি ব্যবহার না করেন।’’
এ বিষয়ে আজ হাইকোর্ট সবার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছে এবং যদি এর ব্যত্যয় ঘটে এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করা হয় তাহলে প্রয়োজনে উনারা তলব করতে পারেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, ‘‘যেহেতু মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের মূল্যায়নে আজকে স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি এবং আদালত বলেছেন মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন ২০০২ এর ৭ (ঝ) এ স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সনদ কোনো ব্যক্তি জালিয়াতির মাধ্যমে যদি ভুয়া সনদ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে তাহলে সেটা সেই ব্যক্তির দোষ। এ কারণে সামগ্রিকভাবে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের কোনোভাবে ‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে সম্বোধন করা যাবে না।’’
আদালত বলেছে, কোনো ব্যক্তি যদি জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া সনদ নিয়ে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে সেটা সে ব্যক্তির নিজস্ব অপরাধ বা দোষ। প্রয়োজনে সে ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তার এ ভুলের কারণে সামগ্রিকভাবে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের যে অবদান যে সম্মান সেটাকে কটাক্ষ করে ‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা’ শব্দ ব্যবহার করা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন বৈ আর কিছু নয়।
উল্লেখ্য, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল কুমিল্লার হোমনার বাসিন্দা মো. আব্দুল আজিজ খন্দকারের মুক্তিযোদ্ধার সনদ জাল উল্লেখ করে তাকে শুনানির জন্য নোটিশ পাঠান।
ওই নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ৭ মে তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। ওই রিট আবেদনটির শুনানিকালে হাইকোর্ট উপরোক্ত অভিমত দেয়। আদালত আগামী রবিবার রিট আবেদনটির ওপর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে।