ইমতিয়াজ উদ্দিন নামে এক রোগী জানান, তিনি খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফোন দিয়েছিলেন অর্থোপেডিক্স চিকিৎসক আব্দুল কাদেরকে দেখানোর জন্য। কিন্তু সেখান থেকে তাকে জানানো হয় যে অনেক চিকিৎসক হাসপাতালে না আসায় তারা কোনো সিরিয়াল নিতে পারছেন না।
সোনাডাঙ্গা আইকন হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিকের পরিচালক নিহান বলেন, ‘এখানে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকসহ অন্য দুই-তিনজন চিকিৎসক আছেন। তবে এখন তারা বলছেন কোনো রোগীর সিরিয়াল যেন না নেয়া হয়, কয়েকদিন তারা আসবেন না। তবে কেন আসবেন না তা সঠিকভাবে বলতে পারছি না।’
নগরীর আহসান আহমেদ রোডে অবস্থিত লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, অনেক রোগী আলট্রাসনোগ্রাম করাতে এসেছিলেন কিন্তু তাদের ফেরত যেতে হচ্ছে। কারণ সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক আসেননি। তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিল।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মী ফাহমিদা বলেন, ‘কোনো চিকিৎসক যদি না আসেন তাহলে আমরা কী করতে পারি? আমরা রোগীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে তাদের ভিজিটের টাকা ফেরত দিয়েছি।’
ল্যাবকন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার জানান, তাদের এখানেও আলট্রাসনোগ্রাম করার জন্য যে দুজন চিকিৎসক আছেন তারাও বলে দিয়েছেন যে কয়েকদিন আসবেন না।
নগরীর স্টার ডায়াগনস্টিক হাসপাতালের চিত্রও একই রকম। সেখানে গিয়ে দেখা যায় রোগীদের ভিজিটের টাকা ফেরত দেয়া হচ্ছে। সেখানে হৃদরোগের সমস্যা নিয়ে আসা রাশিদা গাজী (৫৫) বলেন, ‘এসেছিলাম ডা. অলোক কুমার মণ্ডলের কাছে। প্রায় দুই ঘণ্টা বসে থাকার পর একজন এসে বলছেন যে তিনি কয়েকদিন আসবেন না।’
খুলনায় প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগীদের সিরিয়ালের জন্য যে মোবাইল নম্বর দেয়া থাকে তার প্রায় সব এখন বন্ধ বা কেউ ফোন ধরছেন না।
এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সুজনের (সুশাসনের জন্য নাগরীক) খুলনা মহানগর সাধারণ সম্পাদক কুদরত এ-খুদা বলেন, ‘এটা চিকিৎকদের জন্য এক অমানবিক কাজ। এ ধরনের কাজ মোটেও সঠিক না। এটা লজ্জাজনক বিষয়।’
তিনি চিকিৎসকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করলেও বলেন, ‘এ বিষয়টা তো সরকারের না। সারা বছর লাখ লাখ টাকা কামিয়েছেন প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিকরা। তারা এখন চিকিৎসকদের নিরাপত্তার সরঞ্জাম দিয়ে রোগীদের চিকিৎসা সেবা চলমান রাখছেন না কেন?’
যোগাযোগ করা হলে এ ব্যাপারে খুলনা প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. শওকত লস্কর বলেন, তাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে রোগীদের সেবা দেয়া বন্ধের কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি।