জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, জেলায় দুই হাজার ১০৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এ সকল বিদ্যালয়ে শিক্ষকের পদ রয়েছে ১২ হাজার ৭০৮টি। অথচ জেলার ১৭টি উপজেলার ২৯৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। স্কুলগুলো চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে। ১ হাজার ২০৮ জন সহকারি শিক্ষক নেই।
জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলায় প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষকের পদ বেশি খালি রয়েছে। এছাড়া আদর্শ সদর উপজেলায় ১০টি, লাকসাম উপজেলায় ৭টি, দেবিদ্বার উপজেলায় ২২টি, মুরাদনগর উপজেলায় ২৭টি, দাউদকান্দি উপজেলায় ২২টি, চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় ২২টি, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় ১১টি, বরুড়া উপজেলায় ৬টি, বুড়িচং উপজেলায় ৩৭টি, চান্দিনা উপজেলায় ৭টি, হোমনা উপজেলায় ২১টি, নাঙ্গলকোট উপজেলায় ৪০টি, মেঘনা উপজেলায় ১২টি, মনোহরগঞ্জ উপজেলায় ২০টি, সদর দক্ষিণ উপজেলায় ৯টি এবং লালমাই উপজেলায় ৫টি প্রধান শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে।
একই সঙ্গে আদর্শ সদর উপজেলায় ৬১টি, লাকসাম উপজেলায় ৪৫টি, দেবিদ্বার উপজেলায় ৪০টি, মুরাদনগর উপজেলায় ১২৪টি, দাউদকান্দি উপজেলায় ১৪৪টি, চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় ১১৪টি ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় ৫৮টি, বরুড়া উপজেলায় ৭৭টি, বুড়িচং উপজেলায় ১৪টি, চান্দিনা উপজেলায় ৭০টি, হোমনা উপজেলায় ৪২টি, নাঙ্গলকোট উপজেলায় ১৫৭টি, মেঘনা উপজেলায় ২৪টি, মনোহরগঞ্জ উপজেলায় ৯৮টি, সদর দক্ষিণ উপজেলায় ১১টি ও লালমাই উপজেলায় সহকারি শিক্ষকের ৪০টি পদও খালি রয়েছে।
এদিকে নাঙ্গলকোট বান্নাগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের পদ আছে পাঁচটি। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক ছাড়া মাত্র দুজন সহকারি শিক্ষক আছেন। এদের মধ্যে একজন চিকিৎসা ছুটিতে আছেন। এখন প্রধান শিক্ষক ও এক সহকারি শিক্ষক মিলে ১৩৭ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, গত তিন বছর ধরে আমরা শিক্ষক সংকটে রয়েছি। এতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
নাঙ্গলকোট উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন মজুমদার বলেন, নাঙ্গলকোটে প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে উপজেলার বাগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বান্নাগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বিরুলী একে এম হিরমত আলী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিদ্যালয়ে দুজন করে শিক্ষক রয়েছেন।
এ ব্যাপারে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. নাইমুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষক সংকটে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে। শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে এ সংকট দূর করা উচিত।’
কুমিল্লা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুল মান্নান বলেন, আমরা সিনিয়র শিক্ষকদের তালিকা করে অধিদপ্তরে পাঠাবো। এ তালিকা থেকে প্রধান শিক্ষক পদে পদায়ন করলে এ সংকট দূর হবে। এদিকে সহকারি শিক্ষকের লিখিত পরীক্ষা হয়েছে। মৌখিক পরীক্ষা শেষে তাদের নিয়োগ দিলে সহকারি শিক্ষকের সংকটও কমবে।