বাগেরহাট ১৪ নভেম্বর (ইউএনবি)- বাগেরহাট চিংড়ি গবেষণাকেন্দ্রে স্থাপিত সৌরবিদ্যুৎ থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ এখন জাতীয় গ্রিডে সরবারহ করা হচ্ছে। ওই গবেষণাকেন্দ্রে বিদ্যুতের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন গড়ে ছয় কিলোওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হচ্ছে।
দেশে চিংড়িঘেরগুলোতে সোলার প্যানেল স্থাপন করে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করে সেই বিদ্যুৎ ঘেরের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব বলে জানালেন বাগেরহাট চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. খান কামাল উদ্দিন।
তিনি জানান, ২০১৭ সালে গবেষণা কেন্দ্রের প্রশাসনিক ভবনের ছাদে এবং পুকুর কমপ্লেক্সে ২৫ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা সম্পন্ন পাঁচটি সোলার প্যানেল স্থাপন করা হয়। চলতি বছরের ১৬ অক্টোবর ওই প্যানেল থেকে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়। উৎপাদিত বিদ্যুৎ নিজেরা ব্যবহার করার পর অবশিষ্ট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবারহ করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ওই প্যানেল স্থাপনে অর্থায়ন করে। এছাড়া শ্রেডো ও জার্মানী প্রতিষ্ঠান জিআইজেড-এর অর্থায়নে প্যানেলে উৎপাদিত অতিরিক্ত বিদ্যুৎ নেট মিটারিং পদ্ধতিতে জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করা হচ্ছে।
ড. খান কামাল উদ্দিনের তথ্য মতে, প্রতিদিন সেখানে সৌরপ্যানেল থেকে ১০০ থেকে ১১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। তারা গবেষণা করে দেখেছেন চিংড়িঘেরে সৌরপ্যানেল স্থাপন করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে চিংড়িঘেরের কোনো ধরনের ক্ষতির প্রভাব পড়বে না।
তিনি আরও জানান, দেশে দুই লাখ ৭৫ হাজার হেক্টর চিংড়িঘের রয়েছে। প্রতিটি চিংড়িঘেরের শতকরা ৪৫ ভাগ অংশ জুড়ে সৌরপ্যালে স্থাপন করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। চিংড়িঘের থেকে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করে নিজেদের বিদ্যুৎ চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় গ্রিডে সরবারহ করা সম্ভব।
বাগেরহাট ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ঘোষ বলেন, চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্রে স্থাপিত সৌরপ্যানেল থেকে প্রতিদিন গড়ে ১১০ ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। উৎপাদিত বিদ্যুৎ চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্রে ব্যবহারের পর অবশিষ্ট বিদ্যুৎ নেটমিটারিংয়ের (ইনভার্টার) মাধ্যমে স্বয়ংক্রীয়ভাবে জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হয়।
‘দেশে এ ধরনের প্যানেল আরও বেশি স্থাপন করা হলে বিদ্যুতের চাহিদা অনেকাংশে পূরণ হবে বলে জানান এই প্রকৌশলী।’