এখন থেকে কৃষকদের বীজ হিসেবে আর পেঁয়াজের বাল্ব বা কন্দ ব্যবহার করতে হবে না। সরাসরি বীজ বপন করেই অল্প খরচে মানসম্মত পেঁয়াজ উৎপাদন করতে পারবেন তারা।
কৃষকদের মাঝে বিতরণের জন্য বিপুল পরিমাণ বীজ উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আগামী মৌসুমে সহজ শর্তে কৃষকদের মাঝে এসব পেঁয়াজের বীজ সরবরাহ করা হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে, প্রতিবছরই দেশে পেঁয়াজের সংকট দেখা দেয়। এর সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে পেঁয়াজের বীজ সংকট ও সংরক্ষণের অভাব। জমিতে বীজ হিসেবে বিঘা প্রতি প্রায় ২০০ কেজি বাল্ব বা কন্দ ব্যবহার হয়ে থাকে। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। এ কারণে কৃষকের ইচ্ছা থাকলেও খরচের ভয়ে বিপুল পরিমাণ জমিতে পেঁয়াজ চাষ করতে চান না।
কৃষি বিজ্ঞানীরা জানান, এ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ চাষ করতে গিয়ে একদিকে কৃষককে যেমন বাড়তি খরচ গুনতে হয় তেমনি ফলনও কম হয়। তাছাড়া পেঁয়াজ খেত ছত্রাকজনিত নানা রোগ আক্রান্ত হয়। এ অবস্থায় পেঁয়াজ চাষকে সহজলভ্য করতে বিজ্ঞানীরা নানা গবেষণা শুরু করেন। বিশেষ করে পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন করে কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করার উদ্যোগ নেয়া হয়।
কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান জানান, এক বিঘা জমিতে যেখানে পাঁচ থেকে ছয় মণ পেঁয়াজের বাল্ব বা কন্দ লাগে সেখানে কৃষক যদি পেঁয়াজের বীজ পান তাহলে তারা এক কেজি বীজে পাঁচ থেকে ছয় হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ করতে পারবেন। তাতে কৃষকের বিঘা প্রতি পেঁয়াজের বীজের খরচ ৩০ থেকে ৪০ হাজারের পরিবর্তে খরচ মাত্র পাঁচ থেকে ছয়শ টাকায় নেমে আসবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে যে পেঁয়াজ উৎপাদন হয় তা দিয়ে দেশের মোট চাহিদার ৫৭.১৪ শতাংশ মেটানো সম্ভব। এ ঘাটতি পূরণে সরকারকে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করে ৭.৬৩ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়।’
‘এসব দিক বিবেচনা করেই পেঁয়াজ চাষকে সহজলভ্য করার জন্য আমরা বীজ উৎপাদন করে কৃষকের কাছে সরবরাহ করার উদ্যোগ নিয়েছি। উন্নতজাতের বারি-১ জাতের এ পেঁয়াজের বীজ খুব অল্প সময়ের মধ্যে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে যশোরসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া হবে,’ বলেনন কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের এ কর্মকর্তা।