ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীটির বিভিন্ন অংশে থাকা কচুরিপানা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় পরিষ্কার করা হয়েছে। এতে নদীটি ফিরে পেয়েছে আগের রূপ।
জানা যায়, সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন জুড়ে নবগঙ্গা নদীতে কচুরিপানা জমেছিল দীর্ঘদিন ধরে। নাব্যতা না থাকায় নদীর স্বাভাবিক গতিপথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রতিবছর দখল হয়ে যাচ্ছিল নদীটি।
নদীটির স্বাভাবিক গতিপথ ফিরিয়ে আনতে এবছর সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে নিয়ে নদী পরিষ্কারের উদ্যোগ নেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী ইসলাম। কর্মঠ এই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উদ্যোগকে সাড়া দিয়েছে স্থানীয় মানুষ। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় মৎস্যজীবীদের সহযোগিতায় চলতি মাসের শুরুর দিকে শুরু হয়েছে নদীর কচুরিপানা পরিষ্কার অভিযান।
এরই মধ্যে পরিষ্কার করা হয়েছে শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া এ নদীর প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে থাকা কচুরিপানা।
এলাকাবাসী মনে করেন, নদী পরিষ্কার হলে কমপক্ষে সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ৩০-৩৫ গ্রামের মানুষ উপকৃত হবে। নদীতে থাকা দেশীয় প্রজাতির মাছসহ জীব-বৈচিত্র রক্ষা পাবে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ঘোড়শাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পারভেজ মাসুদ লিল্টন বলেন, নদীটিতে গত ১৫-২০ বছর আগে প্রচুর দেশীয় মাছ পাওয়া যেত। স্থানীয় মৎস্যজীবীরা নদীতে খেয়া ফেলে মাছ শিকার করত। কিন্তু কচুরিপানার কারণে নদীর স্বাভাবিক গতিপথ বন্ধ হয়ে পানি নিষ্কাশনে সমস্যা দেখা দেয়।
কচুরিপানা পরিষ্কারের কর্মসূচি বাস্তবায়ন হলে নদীটিতে আগের মতো মাছ পাওয়া যাবে, মনে করেন তিনি।
শহরের ভুটিয়ারগাতি এলাকার মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুর সাত্তার বলেন, নদীর কচুরিপানা পরিষ্কার করার কারণে নদীটির স্বাভাবিক গতিপথ ফিরে পেয়েছে। এতে উপকার হয়েছে গরীব অসহায় মৎস্যজীবীদের। এ জন্য সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য।
তিনি আরও বলেন এ ধরনের উদ্যোগ সকল উপজেলায় গ্রহণ করা হলে জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীগুলো আগের রূপ ফিরে পাবে।
এ অভিযান সম্পর্কে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথের নির্দেশনায় ‘নবগঙ্গা বাঁচাও’ শ্লোগানে সদর উপজেলার নবগঙ্গা, বেগবতি ও ভৈরব নদের কচুরিপানা পরিষ্কারের কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে।
এর অংশ হিসেবে প্রথমে নবগঙ্গার কচুরিপানা পরিষ্কার করা হচ্ছে। নদীপাড়ের মানুষের সুবিধা, মৎস্যজীবীদের সুবিধা ও নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ঠিক রাখতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, বলেন তিনি।