পাতায়ার থাই-বাংলাদেশি কমিউনিটির সাধারণ সম্পাদক নাজির আহমেদ সরকার বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি প্রবাসী বাংলাদেশিরা যে যেখানেই থাকুক না কেন, তারা বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে অপ্রয়োজনীয় হয়রানিমুক্ত পরিবেশের নিশ্চয়তা পেলে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবেন।’
প্রায় ২৫ বছর ধরে থাইল্যান্ডে বসবাস করা নাজির আহমেদ বলেন, সরকারের এমন কিছু কাজ করা উচিত, যাতে করে প্রবাসীদের মধ্যে আস্থা তৈরি হতে পারে।
তিনি বলেন, বিদেশের বাংলাদেশ মিশনগুলোকে প্রবাসীদের সাথে সব সময় ঘনিষ্ঠভাবে চলা উচিত এবং সেই সাথে প্রবাসীদের সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে দেখত হবে।
বাংলাদেশে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে দেশব্যাপী ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করছে সরকার। এসব অঞ্চলে বিদেশিদের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিদের থেকে বিনিয়োগ আশা করছে বাংলাদেশ।
উদাহরণ তুলে ধরে নাজির আহমেদ বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীদের বিরুদ্ধে যদি মিথ্যা মামলা হয়, বিভিন্ন কারণে হয়রানি করা হয়, তাহলে তো তারা বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন না।
ব্যাংককের বাংলাদেশ দূতাবাসের ভূমিকা প্রসঙ্গে ইয়াকুব বুটিক অ্যান্ড ট্রাভেলস কোম্পানি লিমিটেডের এ ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘সাবেক রাষ্ট্রদূত সাদিয়া মুনা তাসনিম ছিলেন সবচেয়ে ভালো। তিনি বাংলাদেশি কমিউনিটির অনেক খোঁজখবর নিতেন। আমরা অন্যদের থেকেও তার মতো (সহায়তা) আশা করি।’
সেলাই থেকে রেস্তোরাঁ ব্যবসা: পর্যটনের শহর পাতায়ায় কয়েক দশক ধরে সুনামের সাথে রেস্তোরাঁ ব্যবসা করে যাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। যাদের বেশিরভাগই সেখানে সেলাই সংক্রান্ত কাজ দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন।
পাতায়ার থাই-বাংলাদেশি কমিউনিটির যুগ্ম সম্পাদক মো. শামসুজ্জামান বলেন, গুণগত সেবা দেয়ার মাধ্যমে আরও অন্যদের সাথে বাংলাদেশি উদ্যোক্তরা এখানে ভালোভাবেই তাদের ব্যবসা করে যাচ্ছেন।
‘এখানে বেশিরভাগ বাংলাদেশি রেস্তোরাঁ ব্যবসার সাথে যুক্ত’ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ, ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর পর্যটকরা এসব রেস্তোরাঁয় খেতে পছন্দ করেন।
পাতায়া সৈকত সংলগ্ন একটি রেস্তোরাঁর মালিক প্রবাসী আলী খান রাসেল বলেন, এখানে নেতিবাচকভাবে না দেখে বরং ইতিবাচকভাবে নেয়ার অনেক বিষয় রয়েছে। ‘গুণগত সেবার মাধ্যমে আমরা পর্যটকদের অভিভূত করে যাচ্ছি।’
নাজির আহমেদ বলেন, ইউরোপ ও রাশিয়ার এমন অনেক পর্যটক রয়েছেন যারা এখানে এসে পোশাক বানানোর দোকানে এসে স্যুট কিনতে পছন্দ করেন। কারণ এখানে বাংলাদেশিদের কাছে গুণগত মানসম্পন্ন স্যুট পাওয়া যায়।
‘তবে ইউরোপ ও রাশিয়ার পর্যটক থাকার পরও ইদানিং পোশাক বানানোর ব্যবসা খারাপ যাচ্ছে। এর পেছনে বিভিন্ন বৈশ্বিক কারণও রয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।
প্রবাসীরা এখন মূলত রেস্তোরাঁ, পর্যটন ও আমদানি-রপ্তানি ব্যবসার ওপর জোর দিচ্ছেন জানিয়ে এ উদ্যোক্তা বলেন, পাশাপাশি তারা পর্যটকদের চাহিদা অনুযায়ী অন্যান্য ব্যবসাও করে যাচ্ছেন।