এটা এখানকার নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। যথাসময়ে সংস্কার কাজ না করায় বিশ্বনাথের গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটির এখন বেহাল দশা। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার কারণে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত।
প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে উপজেলাবাসীকে।
বিশ্বনাথ উপজেলার প্রধান সড়কগুলোর মধ্যে ‘রামপাশা-বৈরাগী বাজার-সিংগেরকাছ’ বাজার একটি অন্যতম সড়ক। জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দিয়ে বিশ্বনাথ, জগন্নাথপুর ও ছাতক এই তিন উপজেলার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন। সড়কের সাথে সরকারি ও বেসরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বেশ কয়েকটি বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক প্রতিষ্ঠানের সংযোগ রয়েছে।
২০১৫ সালে সড়কে সংস্কার কাজ করা হয়। কিন্তু সংস্কারের কিছু দিন যেতে না যেতেই ফের সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে সৃষ্টি হতে থাকে গর্ত। স্থানীয় রহমাননগর, বৈরাগী বাজার ও কাটলীপাড়া নামক স্থানে সড়কে যে বিশাল গর্ত সৃষ্টি হয়েছে তা দেখলে মনে হয় এটি সড়ক নয়, ছোটখাট পুকুর। পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বিশেষ করে সড়কের এই তিনটি স্থানে ১২ মাসই জলাবদ্ধতা থাকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রহমান নগর গ্রামের কিছু লোক তাদের বাড়ির পাশ দিয়ে প্রবাহিত সরকারি নালাটি বেআইনিভাবে বন্ধ করে দেয়ার কারণে এই ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী জনসাধারণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এবং রহমাননগর গ্রামের প্রায় ৪০টি পরিবারের লোকজন পানিবন্দী অবস্থায় জীবনযাপন করছেন।
পানি নিষ্কাশনের সরকারি নালাটি বন্ধ করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও নালাটি পূর্বের ন্যায় খনন করে দেয়ার দাবিতে বছরখানেক পূর্বে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে স্মারকলিপি দিয়েছিলে এলাকাবাসী।
গত ২০ জুন বিশ্বনাথে সড়কের পাশে অবৈধভাবে নির্মিত পাকা দেয়াল অপসারণ করা হয়েছে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেমা-তুজ-জোহরা অভিযান পরিচালনা করে রামপাশা ইউনিয়নের সড়কের পাশে অবৈধভাবে নির্মিত পাকা দেয়াল উচ্ছেদ করেন।
তবে রহমাননগর এলাকায় বন্ধ করে দেয়া পানি নিষ্কাশনের একমাত্র সরকারি নালাটি পূর্বের ন্যায় খুলে দেয়া না হলে এ উচ্ছেদ অভিযান কোনো কাজে আসবে না বলেই মনে করে স্থানীয়রা।
এব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা আবদুস শহিদ সুমন বলেন, জলাবদ্ধতা হওয়ায় সড়কটির করুণ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। রামপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবহিত করেছি।
উপজেলা প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ ভূঁইয়া বলেন, সড়কের যেসকল স্থানের বড় বড় গর্ত রয়েছে তা দ্রুত ভরাট করা হবে। কিন্তু সড়কটির সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলেও কোনো ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ড্রপ না করায় আবারও টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিতাভ পরাগ তালুকদার বলেন, সড়ক যানবাহন চলাচলের উপযোগী করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে।