পানাম নগরীর পাঁচটি ভবন সংস্কারের জন্য কোরিয়া ভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি ইয়াংওয়ান কর্পোরেশনের সাথে চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোনো এক অজ্ঞাত কারণে সেই চুক্তি আর হয়নি।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ পৌরসভা এলাকায় অবস্থিত পানাম নগর জনপদ। পানাম ও তার আশপাশের গ্রামগুলোতে শেওলা আর লোনা ধরা দেয়াল ফুঁড়ে হাঁ হয়ে ইট আর কালো পাথরের টেরাকোটার ধূসর স্মৃতি বিক্ষিপ্ত অবস্থায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। অবহেলার চিহ্ন গায়ে মেখে আজও দাঁড়িয়ে আছে শত শত বছরের পুরনো অট্টালিকাগুলোর ধ্বংসাবশেষ। সোনালি অতীতের সাক্ষী এসব অট্টালিকা এখনও নজর কাড়ে ভ্রমণপিপাসু দেশি-বিদেশি পর্যটকদের।
২০০৬ সালে ওয়ার্ল্ড মনুমেন্ট ফান্ড পানাম নগরীকে বিশ্বের ধ্বংসপ্রায় ১০০ ঐতিহাসিক স্থাপনার তালিকাভুক্ত করে। পানামকে ঘিরে আছে প্রাচীন নগর ও রাজধানী কেন্দ্রিক স্মৃতি। যে স্মৃতির বেশিরভাগই কালের করাল গ্রাসে লুপ্ত আজ।
২০০১ সালে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর পানাম নগরী সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করে। ওই সময় অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে পানাম নগরীকে উদ্ধারের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৯ সালে পানাম নগরীকে সম্পূর্ণভাবে দখলমুক্ত করে স্থানীয় প্রশাসন। এ নগরীর ছোট-বড় মোট ৫২টি ভবনকে চিহ্নিত করে অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়।
প্রাথমিকভাবে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা ব্যয়ে কয়েকটি ভবনের সংস্কার কাজ শুরু হয়। কিন্তু সংস্কারের নামে পানাম নগরীর নয়টি ভবনের প্রত্নতাত্ত্বিক সৌন্দর্য নষ্ট করে চুন-সুরকির প্রলেপ দিয়ে সংস্কার করার চেষ্টা করা হলে স্থানীয় সুশীল সমাজ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ দলের আপত্তিতে সংস্কার কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
সাহিত্যিক ও ইতিহাস গবেষক শামসুদ্দোহা চৌধুরী বলেন, পুরাতত্ত্ব সংরক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে পানাম সিটির বিভিন্ন ভবনের ইট-সুরকি খসে পড়ছে।
সোনারগাঁর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনুর ইসলাম বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে পানাম নগরী সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে। একটি বিদেশি কোম্পানির সাথে যোগাযোগ হয়েছে। তাদের সাথে চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে পাঁচটি ভবন সংস্কার করা হবে। আশা করি শিগগিরই এ নগরীর সংস্কার কাজ শুরু হবে।