শাবি, ১২ এপ্রিল (ইউএনবি)- পুরাতনকে পেছনে ফেলে রবিবার পহেলা বৈশাখে নব আলোর কিরণ শুধু প্রকৃতিকে নয়, নবরূপে সাজিয়ে যাবে প্রত্যেক বাঙালির হৃদয়কোণও।
বৈশাখের মূল অনুষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের হলেও পিছিয়ে থাকছে না দুটি পাতা ও একটি কুড়ির দেশের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। সিলেটে বন্ধু-বান্ধব কিংবা পরিবার নিয়ে ঘোরাঘুরি মানেই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২০ একরের ক্যাম্পাস।
সারাদেশের ন্যায় ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী উৎসবের প্রস্তুতি চলছে শাবিতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী কিংবা সাংস্কৃতিক সংগঠক কেউই প্রস্তুতির বাইরে নেই।
বাসন্তী রাঙা শাড়ি কিংবা শ্বেতশুভ্র পাঞ্জাবি, পান্তা-ইলিশ আর মঙ্গল শোভাযাত্রাময় একটি দিন উদযাপনে সবাই নিচ্ছেন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিন থেকে শুরু করে ক্যাফেটেরিয়া, ফুডকোর্ট কিংবা টং দোকান, শহীদ মিনার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সেন্টার বা গোলচত্বর- বৈশাখের উন্মাদনা ছড়িয়েছে সবখানে।
নতুন রূপে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন বিভাগ, জায়গায় জায়গায় বসানো হচ্ছে বৈশাখী স্টল। বর্ষবরণের মূল অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রার জন্য বরাবরের মতো এবারও রঙ-তুলি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্যবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ই’ ভবনের সামনে মঙ্গল শোভাযাত্রার জন্য বিভিন্ন প্রাণীর ভাস্কর্য তৈরি করছেন শিক্ষার্থীরা।
স্থাপত্যবিদ্যার তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী চৌধুরী মোহাম্মদ আরিফ বলেন, এবারের পহেলা বৈশাখ উদযাপনে প্রতিপাদ্য ধরা হয়েছে ‘ষোলআনায় বাঙালিআনা’।
‘সেই বাঙালিয়ানার শান্তির প্রতীক হিসেবে গ্রামীণ জীবনের বর্ণিল উপকরণের সাথে মিল রেখে আমরা তৈরি করছি পশু-পাখির কিছু প্রতীকী জিনিস- যা শান্তির বার্তা বহন করে’, যোগ করেন তিনি।
সেই সাথে বৈশাখের এ আয়োজনে পুতুল নাচ, পটচিত্র, গ্লাসপেইন্ট প্রদর্শনী, রিকশা যাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি থাকবে বলে জানান তিনি।
পহেলা বৈশাখ উদযাপন প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদ ইউএনবিকে বলেন, সকাল ১০টায় মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এছাড়া দিনব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বাউলগান, মোড়গ লড়াই, সাপের খেলাসহ বিভাগগুলোতে আলাদা আলাদাভাবে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তার দিকে দৃষ্টি রেখে সব অনুষ্ঠান বিকাল ৫টার মধ্যে শেষ করে আগত দর্শক, শ্রোতা ও অতিথিদের সাড়ে ৫টার মধ্যে ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে হবে বলে জানান প্রক্টর।
এদিকে নতুন বছরকে বরণ করে নিতে পিছিয়ে নেই আদিবাসী শিক্ষার্থীরাও। পুরাতনকে বিদায় এবং নতুনকে বরণ করে নিতে পহেলা বৈশাখের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আদিবাসী শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘এসোসিয়েশন অব ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস, সাস্ট’-এর উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বৈসাবি উৎসব উদযাপিত হবে।