বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) সদস্য সিদ্দিক জোবায়ের বলেন, ‘আমরা পাম্প অপারেটরদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনার জন্য একটি খসড়া নীতি প্রস্তুত করেছি। তবে, স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠকের পর নীতিটি চূড়ান্ত করা হবে।’
নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার ঘটানোর জন্য এবং সারাদেশে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের উদ্দেশ্যে একটি নতুন সরকারি সংস্থা হিসেবে স্রেডা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এটি ইতিমধ্যে ‘নেট মিটারিং সিস্টেম’ ব্যবস্থার অধীনে গ্রাহকদের ছাদের সৌর বিদ্যুৎ প্যানেল থেকে অব্যবহৃত বা উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ কেনার নীতি চালু করেছে, যা শিল্প কারখানার ভোক্তাদের কাছ থেকে দারুণ সাড়া পেয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শিল্প কারখানার ১৭৯ জন ভোক্তার কাছ থেকে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলো এখন ৪.২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনছে।
সিদ্দিক জোবায়ের বলেন, দুটি প্রধান উদ্দেশ্য নিয়ে সরকার সৌরচালিত সেচ পাম্প অপারেটরদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনার পরিকল্পনা করেছে। প্রথমটি হচ্ছে সেচ পাম্পের কার্যক্রমের জন্য স্থাপন করা সৌর প্যানেল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা। দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হচ্ছে সৌর সেচ পাম্প প্রকল্প বাণিজ্যিকভাবে কার্যকর করা।
স্রেডা’র কর্মকর্তারা জানান, দেশে প্রায় ১.৩৪ মিলিয়ন ডিজেল-চালিত সেচ পাম্প রয়েছে, যা ৩.৪ মিলিয়ন হেক্টর জায়গা জুড়ে অবস্থিত।
সরকার এই ডিজেল-চালিত পাম্পগুলোকে সৌর-চালিত পাম্প দ্বারা প্রতিস্থাপন করার লক্ষ্য গ্রহণ করেছে, যা সেচ খাত থেকে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করবে।
কর্মকর্তারা জানান, ১, ১০০টি ডিজেল-চালিত পাম্প এখন পর্যন্ত সৌর-চালিত পাম্প দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড প্রকল্পগুলোর অর্থায়ন করেছে। এছাড়া কয়েকটি এনজিও ও বাণিজ্যিক সংস্থা এ বিষয়ে ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থায় সৌর পাম্প স্থাপন করেছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, বছরের বেশিরভাগ সময়ে এসব পাম্প সেচের অভাবের নিষ্ক্রিয় বা কর্মহীন হয়ে পড়ে থাকে। এর ফলে সেসব পাম্পের সৌর প্যানেল থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ অব্যবহৃত হয়ে পড়ে থাকে, এতে বিশাল পরিমাণ বিদ্যুতের অপচয় হয়।
দ্বিতীয়ত, তিনি বলেন, সম্পূর্ণ বাণিজ্যিকভাবে কাজ করার জন্য এসব পাম্প অপারেটরদের কিছু সহায়তাও করা প্রয়োজন।
প্রকল্পগুলো বাণিজ্যিকভাবে কার্যকর প্রমাণিত হলে, ডিজেল-চালিত পাম্পগুলোকে সৌর-চালিত পাম্প দ্বারা প্রতিস্থাপন কাজের জন্য অনেক লোককে উৎসাহিত করা হবে।
তিনি বলেন, নেট মিটারিং সিস্টেম ব্যবস্থার সাফল্য সরকারকে সৌর সেচ পাম্পের জন্য একই পদ্ধতি চালু করতে উৎসাহিত করেছে।