কিন্তু নির্মাণের তিন বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত হস্তান্তর করা হয়নি মহিলা মার্কেটটি। এদিকে মার্কেটটি পড়ে থাকতে থাকতে নষ্ট হবার উপক্রম হয়েছে। এতে সরকারি উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গ্রামের হতদরিদ্র নিম্ন আয়ের নারীদের উন্নয়নের জন্য সরকার জেলার ফুলবাড়ী উপজেলায় খড়িবাড়ীবাজারে মহিলা মার্কেট নির্মাণ করে। এটি এলজিইডি বিভাগের অধীনে গত ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে রংপুরের মেসার্স তাজমঞ্জি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজ শুরু করেন। তারা কার্যাদেশ নিয়ে ৭০ লাখ ৭৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ৬টি দোকান ঘর ও একটি বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির ভবন নির্মাণ করে দেন।
ভবনের কাজ বুঝিয়ে দিয়ে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সম্পন্ন বিল উত্তোলন করেন। কিন্তু তিন বছরও ভবনের রুমগুলো সুবিধাভোগীদের কাছে হস্তান্তর হয়নি। সুবিধাভোগিরা ঘর বরাদ্দ পাওয়ার আশায় সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোতে ধর্না দিয়ে আসলেও পাচ্ছে না বরাদ্দের ঘর। কবে পাবেন তাও কেউ জানে না।
এক শ্রেণির অসাধু প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা উঠে পড়ে লেগেছে গোপনে ঘর বরাদ্দ নেয়ার জন্য। এতে করে মার্কেট নির্মাণের আগে যাদের লিজ নেয়া ঘর ছিল তাদের বঞ্চিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে ফুলবাড়ী উপজেলায় বালার হাট ও নেওয়াশি বাজারে মহিলা মার্কেট নির্মাণের পর একই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে শুধু নারীরা দোকান চালু করে ব্যবসা করার কথা। সে অনুযায়ী নারীরা স্ট্যাম্পের মাধ্যমে চুক্তি করেছেন। কিন্তু দোকানগুলো অপেশাদারি একশ্রেণির প্রভাবশালী তাদের নামে বরাদ্দ নিয়ে সাব লিজ দিয়েছেন। ওইসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাইন বোর্ডে মহিলা মার্কেট কথাটি পর্যন্ত লেখা নেই। বাজারে একটি দোকানও মহিলা দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে না। ফলে নামে মাত্র ভাড়ায় নারীর অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে করা সরকারের নেয়া উদ্যোগ এখন ভেস্তে যেতে বসেছে।
ব্যবসায়ী আ. মালেক জানান, প্রায় দুই যুগ ধরে মানুষের দোকান ভাড়া নিয়ে মুদি দোকান করে সংসার চালিয়ে আসছি। সেই দোকান ঘর ভাঙার পর ওই জায়গায় মহিলা মার্কেট করেছে সরকার। স্ত্রী আর প্রতিবন্ধী মেয়ের নামে আবেদন করেছি। সে ঘর বরাদ্দ পাওয়ার আশায় প্রশাসন ও চেয়ারম্যানের কাছে একাধিক বার যোগাযোগ করেছি। কাজ হয়নি। কর্তৃপক্ষ বার বার দোকান দেয়ার আশ্বাস দিলেও লাভ হয়নি। এভাবেই তিন বছর কেটে গেছে।
এ ব্যাপারে বড়ভিটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খয়বর আলী জানান, অনেকেই আবেদন করেছেন। কমিটির সদস্যদের নিয়ে মিটিং করে দোকান ঘর হস্তান্তর করা হবে।
ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী আসিক ইকবাল জানান, ভবনের কাজ শেষ হওয়ার সাথে সাথে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষতে অবগত করা হয়েছে। তারা পদক্ষেপ নিলে হস্তান্তর হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাছুমা আরেফিন জানান, আবেদনগুলো চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেগুলো যাছাই বাছাই করে দ্রুত যাতে প্রকৃত সুবিধাবঞ্চিত পায় তা ব্যবস্থা নেয়া হবে।