বৃহস্পতিবার দেশটির স্বাধীনতা দিবসে দিল্লির ঐতিহাসিক লাল কেল্লায় মোদি যখন এ ভাষণ দেন তখনও টানা একাদশ দিনের মতো গৃহবন্দী কাশ্মীরের প্রায় ৪০ লাখ মানুষ।
ভাষণে মোদি বলেন, কাশ্মীরের আগের অবস্থান- কিছু অর্থনৈতিক স্বায়ত্তশাসন এবং বাইরের লোকদের জমি কিনতে না পারা ও সরকারি চাকরি না পাওয়া- এগুলো অন্যায় ছিল। কাশ্মীরি নারীদের সাথে ন্যায় ছিল না। তারা বাইরের কাউকে বিয়ে করলে উত্তরাধিকার হারাতেন।
স্বাধীনতার ৭২তম বার্ষিকীতে মোদি আরও বলেন, ‘জম্মু, কাশ্মীর ও লাদাখের পুরাতন ব্যবস্থাটি দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি উৎসাহিত করেছিল। যখন নারী, শিশু, দলিত ও উপজাতি সম্প্রদায়ের অধিকারের কথা আসে তখন সেখানে অন্যায় ঘটেছিল।’
চলতি আগস্টে সংসদে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সমাপ্ত করার একটি প্রস্তাব পাশ করার কয়েকদিন আগে থেকেই ভারত নিয়ন্ত্রিণ কাশ্মীরে জরুরি অবস্থা বিরাজ করছে। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ওই রাজ্যকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল- জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখে বিভক্ত করার একটি বিল পাশ করানো হয়েছে।
নতুন এ আইনের ফলে বাইরের যে কেউ এখন সেখানে জমি কিনতে পারবেন। কিন্তু কেন্দ্র সরকারের এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করা কাশ্মীরিরা বলছেন, বাইরের মানুষদের সেখানে জমি কেনার অধিকার দিয়ে সেখানকার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যার বৈশিষ্ট্যকেই পাল্টে দিতে চায় সরকার।
সমালোচনাকারীরা হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপি সরকারের এ সিদ্ধান্তকে ফিলিস্তিনে ইসরাইলের আগ্রাসনের সাথে তুলনা করেছেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা দাবি করছেন, কাশ্মীর আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে, তবে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এবং ওই অঞ্চলে কর্মরত অন্যান্য সংবাদ সংস্থার বর্ণনায় সেখানে ইন্টারনেট, সেলফোন এবং ল্যান্ডলাইন পরিসেবা বন্ধ রয়েছে। কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে রাস্তাবন্ধসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা রয়েছে।
এদিকে, সরকারের এমন সিদ্ধান্তে কাশ্মীরে প্রতিদিন প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হলেও দেশের অন্যান্য অংশ থেকে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে মোদি সরকার।