হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী। তাদের সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মইনুল। রিটকারীর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন।
এর আগে গত ১৮ এপ্রিল বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন স্থগিত করেন। পরে এই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে এফবিসিসিআই।
ব্যারিস্টার ইমতিয়াতিজ মইনুল বলেন, ‘এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ বজলুর রহমান ঋণ খেলাপি হওয়ায় নির্বাচনী আপিল বোর্ড তাকে নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা করে। এই সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন মোহাম্মদ বজলুর রহমান। রিটের ওপর শুনানি নিয়ে নির্বাচন স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। কিন্তু হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আজ আপিল বিভাগ স্থগিতাদেশ দেয়ায় আগামী ২৭ এপ্রিল এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন হতে বাধা নেই।’
এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালনা পর্ষদের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়। সংগঠনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ২০১৯-২০২১ সেশনের এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা জানানো হয়।
গতবার অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এবার শীর্ষ এই পদে নির্বাচিত হবেন চেম্বার গ্রুপের একজন। এবার জ্যেষ্ঠ সহসভপতি নির্বাচিত হবেন অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে। আর সহ-সহপতি নির্বাচিত হবেন চেম্বার গ্রুপ থেকে।
এর আগে ২০১৭ সালের ১৪ মে দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল এফবিসিসিআইয়ের। সে সময় অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন বর্তমান সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন।
এফবিসিসিআইয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে গত ২৬ জানুয়ারি নির্বাচন বোর্ড ও নির্বাচন আপিল বোর্ড গঠন করে সংগঠনটি। এবারও নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান থাকছেন অধ্যাপক আলী আশরাফ এমপি।
অন্যদিকে, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক জাহাঙ্গীর আলামিনকে রাখা হয়েছে নির্বাচন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসাবে।
নিয়মানুযায়ী, এবারও এফবিসিসিআইর ৬০ পরিচালক পদের মধ্যে চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে ১৮টি করে মোট ৩৬টি পরিচালক পদে সরাসরি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বাকি ২৪ জন পরিচালক হবেন মনোনিত। যাদের মধ্যে ১২ জন আসবেন বিজিএমইএ, বিটিএমইএ, বিটিএমএসহ বিভিন্ন খাতের শীর্ষ ১২টি অ্যাসোসিয়েশন থেকে। মনোনিত অন্য ১২টি পরিচালক পদ নির্ধারিত ঢাকা চেম্বার, মেট্রোপলিটন চেম্বার, বাংলাদেশ চেম্বার, চট্টগ্রাম চেম্বারসহ দেশের বড় চেম্বারগুলোর জন্য।
বাংলাদেশের ৮২টি চেম্বার ও ৩৮৫টি পণ্যভিত্তিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ পরিষদের সদস্যরা ভোট দিতে ৩৬ জনকে পরিচালক নির্বাচিত করবেন। পরবর্তীতে ৬০ জন পরিচালক এফবিসিসিআই সভাপতি, প্রথম সহ-সভাপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচন করবেন।