বিচারিক আদালতে রায়ের কপি পৌঁছানোর ৪৫ দিনের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
হুদা দম্পতির আপিলের ওপর পুনঃশুনানি শেষে গত বছরের ৮ নভেম্বর বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের বেঞ্চ ওই রায় দেন।
রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি লেখা শেষে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে রবিবার ৬৭ পৃষ্ঠার রায়টি প্রকাশ পায়।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ‘সরকারের উচ্চপর্যায়ে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতি করা হলে তা জাতীয় স্বার্থ, অর্থনীতি ও দেশের ভাবমূর্তির জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে।’
ঘটনা ও তথ্যাদি পর্যালোচনা করে রায়ে বলা হয়, ‘বিচারিক আদালত রায়ের কপি গ্রহণের ৪৫ দিনের মধ্যে আপিলকারী (নাজমুল হুদা) বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন। এতে ব্যর্থ হলে বিচারিক আদালত তার গ্রেপ্তার নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।’
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ২১ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম ধানমণ্ডি থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সিগমা হুদার মালিকানাধীন সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘খবরের অন্তরালে’র একাউন্টে রোডস অ্যান্ড হাইওয়ের কন্ট্রাকটার মীর জাহের হোসেনের কাছ থেকে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন নাজমুল হুদা।
একই বছরের ২৭ আগস্ট বিচার শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত নাজমুল হুদাকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও আড়াই কোটি টাকা জরিমানা এবং তার স্ত্রী সিগমা হুদাকে তিন বছরের কারাদণ্ডেন আদেশ দিয়ে রায় দেয়।
এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ ২০১১ সালের ২০ মার্চ ওই দম্পতিকে ওই সাজার রায় থেকে খালাস দেয়।
পরে দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর ওই খালাসের রায় বাতিল করে হাইকোর্টে পুন:শুনানিতে পাঠায়।
গত বছরের ৮ নভেম্বর পুন:শুনানি শেষে হুদা দম্পতির আপিল খারিজ করে রায় দেয় আদালত।
প্রকাশিত রায়ে, নাজমুল হুদার সাজা কমিয়ে সাত বছরের জায়গায় চার বছর কারাদণ্ড দেয় হাইকোর্ট। এছাড়া তার স্ত্রী সিগমা হুদাকে এ মামলায় তিন বছরের দণ্ড দিয়েছিল বিচারিক আদালত। তার মধ্যে যে পরিমাণ সাজা তিনি খেটেছেন, তাই শাস্তি হিসেবে গণ্য করা হয়েছে এই রায়ে।
এছাড়া বিচারিক আদালতের রায়ে নাজমুল হুদাকে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ বহাল রেখেছে হাইকোর্ট।