তার আগে রাজধানীর একটি হোটেলে কূটনীতিকদের স্বাগত জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরে তিনি জোট নেতাদের সাথে তাদের পরিচয় করিয়ে দেন।
ড. কামাল হোসেন তাদের দলের সাত দফা দাবি এবং ১১টি লক্ষ্যের কথা পড়ে শোনান। পরে তিনি কূটনীতিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
তবে বৈঠকের ফলাফল নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের কিছু জানাননি।
সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ড. কামাল হোসেন জোটের দাবি ও লক্ষ্যের বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের জানিয়েছেন এবং তাদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সাথে আমরা মতবিনিময় করেছি। আমাদের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেন আগামী নির্বাচনে আমাদের দাবি এবং লক্ষ্য ব্যাখ্যা করেছেন। নির্বাচনে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, কামাল হোসেন কূটনীতিকদের জানিয়েছেন, তাদের জোট গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা এবং বিশ্বাসযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে চায়, যাতে করে জনগণ তাদের পছন্দমতো প্রতিনিধি নির্বাচনে সুযোগ পায়।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ভারত, পাকিস্তান, চীন, জাপান, ফ্রান্স, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্ক, গ্রিস, তুরস্ক, ভিয়েতনাম এবং নরওয়েসহ ২৫টি দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে উপস্থিত গণফোরামের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ড. কামাল কূটনীতিকদের জানিয়েছেন, তাদের জোট চায় আগামী নির্বাচন সব দলের অংশগ্রহণে আয়োজন করতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি এবং উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে নিশ্চয়তা দিক সরকার।
বৈঠকে এক কূটনীতিক জানতে চান, তাদের জোটের প্রধান কে, জবাবে আইনজীবী কামাল বলেন, যৌথ নেতৃত্বে তাদের জোট চলছে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি তাদের জোট নির্বাচনে জয়ী হয় তাহলে প্রধানমন্ত্রী ঠিক করার বিষয়ে সংসদ সদস্যরা সিদ্ধান্ত নেবেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া যদি কারাগার থেকে মুক্তি না পান তাহলে জোট নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে গণফোরাম নেতা বলেন, বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য উপায়ে নির্বাচন আয়োজনের জন্য তারা তফসিল ঘোষণার আগেই সব রাজনৈতিক বন্দীর মুক্তি চান।
এ সময় কামাল ও ফখরুল ছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমীর উদ্দিন সরকার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, তার স্ত্রী তানিয়া রব, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মাঈনুল হুসেইন এবং ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ অক্টোবর বিএনপি, ড. কামাল নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া, জেএসডি এবং নাগরীক ঐক্য মিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে নতুন জোট গঠন করে।