তাকে মনোনয়ন দেয়া হলে দল থেকে পদত্যাগ করার হুমকিও দেন তারা।
বিএনপি নেতারা জানান, তারা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছেন যে, এম মোরশেদ খানকে চট্টগ্রাম-৮ আসন থেকে মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে। এ খবরের পর থেকে নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরপর এ বিষয়ে রবিবার রাতে নগরীর একটি হোটেলে এক জরুরি বৈঠক করেন বিএনপি নেতারা।
তারা বলেন, মোরশেদ খান এই নির্বাচনী এলাকা থেকে একাধিকবার এমপি ও মন্ত্রী হয়েছেন। কিন্ত গত দশ বছরে একদিনের জন্যও নির্বাচনী এলাকায় আসেননি। হামলা মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীদের কোনো খোঁজ খবর রাখেননি। আন্দোলন সংগ্রামে তার কোন ভূমিকা ছিল না। এছাড়া বর্তমানে নির্বাচন করার মতো শারীরিক সক্ষমতা তার নেই।
তারা অরও বলেন, বর্তমান সরকারের নির্যাতন নিপীড়নের মধ্যে হামলা-মামলার এই দুঃসময়ে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ান সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে দলের হাল ধরে ছিলেন। তিনি মামলা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বিএনপির নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছিলেন। দলের এই দুঃসময়ে চট্টগ্রাম ৮ নির্বাচনী আসনে ত্যাগী নেতা আবু সুফিয়ানকে মনোনয়ন দেয়ার জন্য বিএনপির নীতি নির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানান।
অন্যথায় ত্যাগী নেতাকে বাদ দিয়ে যারা মাঠে থাকে না তাদেরকে মনোনয়ন দিলে ভবিষ্যতে নেতাকর্মী খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তারা।
বিক্ষুদ্ধ বিএনপি নেতাদের সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরশেনের সাবেক কাউন্সিলার চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন- চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহসভাপতি সাবেক কাউন্সিলর মাহবুবুল আলম, যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন লিপু, মনজুর আলম মঞ্জু, সহ-সাধারণ সম্পাদক জি এম আইয়ুব খান, মৎস্য বিষয়ক সম্পাদক মো. বখতেয়ার, বোয়ালখালী পৌরসভা বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র আবুল কালাম আবু, মহানগর বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. ইদ্রিস আলী, মোহরা ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জানে আলম জিকু, সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম হিরামন, পূর্ব ষোলশহর ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক কাউন্সিলর মো. হাসান লিটন, পাঁচলাইশ ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এম আবুল কালাম আবু প্রমুখ। এসময় প্রায় এই নির্বাচনী এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালের নির্বাচনে মোরশেদ খান চট্টগ্রাম-৮ আসন থেকে নির্বাচন করেন। সেবার জয়লাভ করার পর বিএনপি সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন। ওয়ান-ইলেভেনের সময় তিনি বিদেশে পাড়ি জমান। ২০০৮ সালে এ আসন থেকে নগর বিএনপির তৎকালীন যুগ্ম সম্পাদক এরশাদ উল্লাহ নির্বাচন করেন। কিন্তু মহাজোটের প্রার্থী মাঈনউদ্দিন খান বাদলের কাছে হেরে যান তিনি।
নেতাকর্মীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে মোরশেদ খান বলেন, ব্যবসায়িক কাজসহ নানা ব্যস্ততার কারণে আমি এলাকায় না থাকলেও নেতাকর্মীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক নিবিড় যোগাযোগ ছিল এবং রয়েছে। একদিনের জন্যও এলাকা থেকে বা দলীয় নেতাকর্মীদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলাম না। শুধু এলাকায় থাকলেই যে দলের সঙ্গে থাকা বা ত্যাগী নেতা হওয়া যায় সেটা সঠিক নয়।’