নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, সরকার এখন ছাত্রদলকে ধ্বংস করার জন্য আদালতকে ‘নগ্নভাবে ব্যবহার’ করছে।
‘ছাত্রদল এখন পর্যন্ত যা কিছু করেছে তার সবই আইনসম্মত। ছাত্রদল একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নেতৃত্ব নির্ধারণ করেছে। কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়েছে কমিটি,’ বলেন তিনি।
বিএনপির এ নেতা বলেন, রাজনৈতিক দল ও তাদের কার্যক্রমের ওপর আদালতের এখতিয়ার নেই। ‘এ বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের কিছু পর্যবেক্ষণ আছে।’
‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ এবং রাজনৈতিক দল অধ্যাদেশ ১৯৭৮ অনুসারে বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল এবং এ দল বা তার কোনো কর্মকর্তা বা কর্মকাণ্ডের ওপর সহকারী জজ আদালত বা নিম্ন আদালতের কোনো আদেশ জারি বা নিষেধাজ্ঞা দেয়ার এখতিয়ার নেই,’ যোগ করেন তিনি।
রিজভী আরও বলেন, দেশে অতীতে কখনো কোনো রাজনৈতিক দলের কার্যক্রমে আদালত যুক্ত হয়নি বা হস্তক্ষেপ করেনি।
সোমবার ছাত্রদলের নতুন কমিটির কার্যক্রমে সাত দিনের জন্য অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করে ঢাকার সিনিয়র চতুর্থ সহকারী জেলা জজ নুসরাত জাহান বিথীর আদালত। ছাত্রদলের সদ্য বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমানের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ রায় দেয়।
সেই সাথে আগামী সাত দিনের মধ্যে ছাত্রদলের নতুন সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলকে কারণ দর্শানোর আদেশ দেয়া হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের কাউন্সিলে তারা নিজ পদে নির্বাচিত হন।
আদালতের এ নিষেধাজ্ঞায় অসন্তোষ প্রকাশ করে রিজভী বলেন, ‘কে কমিটি করবে, কীভাবে কমিটি হলো এটা আদালতের বিষয় নয়। আদালতকে দিয়ে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের এ সংস্কৃতি দেশের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।’
তিনি বলেন, তাদের দল বিশ্বাস করে যে আদালত হবে জনগণের শেষ আশ্রয়, ক্ষমতাসীনদের অস্ত্র নয়।
বিএনপির এ নেতা বলেন, আরপিও লঙ্ঘন করে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বাদ দেয়া হলেও আদালত এসব নিয়ে নিশ্চুপ রয়েছে। ‘আদালত যদি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন হতো তাহলে আরপিও ভঙ্গ এবং দস্যুবৃত্তিক কর্মকাণ্ড আমলে নিয়ে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বিলুপ্ত করে দিত। আওয়ামী লীগ হাইকমান্ডকে শোকজ করত।’
‘মিডনাইট ভোট ডাকাতি করার পর অবৈধ নির্বাচন ও ভুয়া সরকারকে বাতিল ঘোষণা করত। শোভন-রাব্বানীর ৮৬ কোটি টাকার চাঁদাবাজির ঘটনায় ব্যবস্থা নিত। ৬০ ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে আদেশ দিত। ব্যাংক ডাকাত, শেয়ার বাজার লুটেরারা আদালতের নজরে আসত। বাংলাদেশকে ফোকলা করে এ সরকারের যারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিত। কিন্তু তা না করে আদালত পড়ে আছে বিএনপিকে নিয়ে,’ বলেন রিজভী।