তিনি এক মানববন্ধন অনুষ্ঠানে বলেন, ‘জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার না থাকায় বর্তমানে দেশের প্রতিটি খাত ধসে পড়ছে। সরকার নিজ দলের লোকজন যারা বড় বড় দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।’
বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহ জুড়ে যা ঘটেছে তাতে বুঝা যাচ্ছে সরকার তার নেতা-কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। শামীম, খালেদ ও সম্রাট ছাড়াও ক্ষমতাসীন দলে আরও শত শত নেতা-কর্মী আছে যারা চাঁদাবাজি, ক্যাসিনো চালানো এবং জুয়ার সাথে সম্পৃক্ত। তাদের কিছু হবে না, কারণ তাদের পেছনের শক্তি হিসেবে কাজ করছে প্রভাবশালী বিভিন্ন এমপি ও মন্ত্রীরা।’
কারাগার থেকে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এগ্রিকালচার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এ মানববন্ধন আয়োজন করে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের দুর্নীতির খবরগুলো এখন দেশের সংবাদপত্রগুলো ভালোভাবেই প্রকাশ করছে। কিছুদিন পরে দেখা যাবে এ নিয়ে আর কোনো খবর প্রকাশ করা হচ্ছে না। কারণ সরকার তার দলের মধ্য থেকে কখনোই দুর্নীতি দূর করতে পারবে না।’
তিনি বলেন, জনগণের কাছে বর্তমান সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। কেননা একাদশ সংসদ নির্বাচন ‘বৈধ’ উপায়ে করেনি।
‘শুধুমাত্র ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরাই দুর্নীতি করেনি, দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরাও দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে আছে। এখন দেশের ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা দুর্নীতির সাথে জড়িত। একজন উপাচার্য অনেক সম্মানের পাত্র হলেও তারা এখন দুর্নীতির সাথে জড়িত। বিচার বিভাগের প্রতিটি স্তরেও এখন দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে,’ অভিযোগ করে মওদুদ।
সরকারকে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন দেয়ার মাধ্যমে প্রতিনিধিত্বশীল সরকার গঠনের আহ্বান জানান তিনি। ‘এর মাধ্যমেই এ দেশ থেকে বিরাজমান নৈরাজ্য, চাঁদাবাজি, জুয়া এবং ক্যাসিনো সংস্কৃতিকে বিতারণ করা যাবে।’
খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে প্রথমেই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।’
তিনি দাবি করেন, মামলাগুলোতে জামিন পাওয়ার যোগ্য হওয়ার পরও ‘মিথ্যা মামলায়’ খালেদাকে ১৭ মাস ধরে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। ‘সরকারের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে এখন আদালতগুলো স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। এ কারণেই খালেদা জিয়া এখনও কারাগারে আছেন।’
মওদুদ আরও বলেন, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খালেদাকে মুক্ত করা সম্ভব হবে না। ‘আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি, সরকার সকল আদালতকে তার নিজের অধীনে রাখায় আমরা এক্ষেত্রে কোনো ভাল ফল পাচ্ছি না। তাই, নেত্রীকে মুক্ত করার একমাত্র বিকল্প হলো রাজপথে আন্দোলন।’
বর্তমান সরকারের পতন নিশ্চিত করতে এবং দেশে গণতন্ত্রকে ‘পুনরুদ্ধার’ করার জন্য তিনি সর্বস্তরের জনগণ ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।