বাম জোট নেতাদের অভিযোগ, এ হামলায় তাদের ১০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
যদিও পুলিশ দাবি করেছে, কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। বাম নেতাদের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ছেড়ে অন্যত্র কর্মসূচি পালন করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে বাম জোট।
করোনা ইস্যুতে স্বাস্থ্যখাতের অব্যবস্থাপন নিয়ে মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবারের এ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে বাম জোট।
তবে বাম নেতাদের অভিযোগ, কর্মসূচি শুরুর পর পুলিশ এসে অবস্থান কর্মসূচি তুলে নিতে বলে। তাতে রাজি না হওয়ায় পুলিশ হামলা চালায়। সমাবেশ থেকে ক্যামেরা, মোবাইল, সাউন্ড সিস্টেম, ব্যানার পুলিশ ছিনিয়ে নেয় বলেও জানিয়েছেন বাম জোট নেতারা।
নেতাদের দাবি, পরে নেতা-কর্মীরা পুলিশের হামলা উপেক্ষা করে পুনরায় অবস্থান নেন এবং সমাবেশ চালিয়ে যান।
তারা জানান, পুলিশি হামলায় আহত হয়েছেন বাসদের (মার্কসবাদী) সদস্য রেজাউর রহমান রানা, প্রসেনজিৎ রুদ্র, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক নাবিল হোসেন, শ্রাবণ দাস, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টে সিলেট নগর শাখার কর্মী সাকিব রানা, দোয়েল রায়, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সংগঠক লাভলুসহ অন্তত ১০ জন।
তবে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) জ্যোতির্ময় সরকার বলেন, পুলিশ কোনো হামলা চালায়নি। তারা যে এলাকায় কর্মসূচি করছিলেন সেখানে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, আদালতসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের এ স্থান ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে কর্মসূচি পালন করতে বলেছিলো পুলিশ। এ অনুরোধ করায় বাম নেতারাই পুলিশের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
এ ঘটনার পর বাম গণতান্ত্রিক জোট সিলেট জেলার সমন্বয়ক ও বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলার আহ্বায়ক কমরেড উজ্জ্বল রায়ের সভাপতিত্বে ও বাসদ জেলা সদস্য প্রণব জ্যোতি পালের পরিচালনায় পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এর পূর্বে বামজোটের নেতা-কর্মীরা সিলেট রেজিস্টারি মাঠে জমায়েত হয়ে মিছিল সহকারে সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যলয় চত্বরে সমাবেশে মিলিত হন।
বক্তারা বলেন, গত একমাস ধরে সিলেটের স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি, অনিয়ম বন্ধসহ ৮ দফা দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছিল। সিলেটের প্রত্যেকটি পয়েন্টে অনুষ্ঠিত পথসভায় নানাভাবে পুলিশ হয়রানি করেছে। এর ধারবাহিকতায় বুধবার জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ের সামনে পুলিশ অত্যন্ত ন্যাক্কারজনকভাবে হামলা চালালো।
‘আমরা মনে করি সিলেটের জেলা প্রশাসকের ইন্ধনেই পুলিশ এ হামলা পরিচালনা করেছে। দেশে আওয়ামী সরকার একটি ফ্যাসিবাদী শাসন পরিচালনা করছে। আর এ জনবিচ্ছিন্ন শাসন পরিচালনার জন্য আমলা নির্ভর ব্যবস্থা গড়ে তুলছে। সিলেটের জেলা প্রশাসকের এ ভূমিকা তাই প্রমাণ করে,’ যোগ করেন বক্তারা।
তারা বলেন, ৮ দফা দাবিতে গত একমাস ধরে বাম গণতান্ত্রিক জোট সিলেটের সাংবাদিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নেতাসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। সবাই বামজোটের উত্থাপিত দাবির সাথে একাত্বতা প্রকাশ করেছেন। ফলে বামজোটের দাবির এ যৌক্তিক আন্দোলনকে দমন করতেই এ হামলা চালায়।
অবস্থান কর্মসূচিতে হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের বিচার দাবি করে তারা সিলেটে স্বাস্থ্যখাতের অনিয়ম, দুর্নীতিবদ্ধসহ বামজোটের উত্থাপিত ৮ দফা দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
তারা জানান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচির ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় নগরের কোর্ট পয়েন্টে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।